জাকারিয়া শেখ, ফুলবাড়ী কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি।।
উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে আইনের তোয়াক্কা না করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন এলাকা, ফসলি জমিতে অবৈধ ভাবে গড়ে তুলছে ইট ভাটা। ইট ভাটাগুলোতে নেই কোন সরকারি অনুমোদন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চলছে এ সমস্ত ইটভাটা গুলো চলছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। অবৈধ ইট ভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়া, গ্যাস ও ধুলায় জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে। এলাকাবাসী ও সচেতন মহলের দাবি অবৈধ ইনভার্টার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেয়ার ।
সরেজমিনে গিয়ে জানাগেছে , জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের আজোয়াটারী গ্রামের বিস্তীর্ণ কৃষিজমিতে মেসার্স ডব্লিউএএইস ব্রিকস ফিল্ড, এবি ব্রিকস, মেসার্স এমএসএইচ ব্রিকস, বড়ভিটা ইউনিয়নের নওদাবশ এলাকায় সাইফুর রহমান সরকারি কলেজের পাশে মেসার্স এএমবি, ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের খামারের বাজার এলাকায় মেসার্স কেএমবি এবং শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের জকুরটল এলাকায় মেসার্স জেএমএস নামে ছয়টি ইটভাঁটা গড়ে উঠেছে। এসব ইটভাঁটার একটিরও নেই পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র। পরিবেশ অধিদফতরে নামমাত্র আবেদন করে শুধু সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে চলছে ইট পোড়ানোর কাজ। শুধু তাই নয়, ইটভাঁটার আয়তন দুই একরের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার নিয়ম থাকলেও বিস্তৃত এলাকা দখলে নিয়েছেন ভাঁটা মালিকরা। ভরাট করেছেন পানি নিষ্কাশনের পথ।
ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পাহাড়, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং লোকালয় থেকে তিন কি.মি. দূরত্বের মধ্যে কোন ইটভাটা নির্মাণ না করার আইনগত নিষেধ থাকলেও ফুলবাড়ীতে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,কৃষিজমি, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে অপরিকল্পিতভাবে ৬ টি ইটভাটা স্থাপন করে প্রতিনিয়ত ইট তৈরি করছেন ইটভাটার মালিকরা।ভাঁটা মালিকদের বেপরোয়া ভাবের কারণে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোর শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষ। ফসলি জমির মাটি কেটে ইট তৈরি ও দীর্ঘমেয়াদি উর্বরতা হারানোর কারণে ফলন হ্রাসের আশঙ্কায় পড়েছেন কৃষকরা।
একাধিক কৃষক জানান, ভাঁটা মালিকরা জমি ভাড়া নিয়ে ইট পোড়ানোর কাজ করছেন। এসব ইটভাঁটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় গত ৫ বছর ধরে বোরো এবং আমন আবাদের ফলন বিঘাপ্রতি ৬-৭ মণ কমে এসেছে। ভাঁটার কালো ধোঁয়া সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে এখানকার সুপারি বাগানের। ধোঁয়ার বিষক্রিয়ায় কয়েক বছর ধরে এই এলাকায় সুপারির ফলন ব্যাপকভাবে কমে গেছে। তা ছাড়া আম, কাঁঠাল, নারিকেলসহ বিভিন্ন ফলের ফলনও কমে গেছে। এছাড়া কৃষকরা জানান প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই ইট তৈরির মহোৎসব চলছে ভাটাগুলোতে।
একাধিক ভাটার মালিকের সাথে কথা হলে তারা জানান, হঠাৎ করে পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স ছাড়াই ভাটা চালাচ্ছি তবে আবেদন করা হয়েছে।
ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহমেদ জানান, ছয়টি ইটভাটা রয়েছে যার একটিরও কাগজপত্র ঠিক নেই, কাগজপত্র গুলো যাচাই করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর কুড়িগ্রামের সহকারী পরিচালক রেজাউল করিমের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান আমাদের নিজস্ব কোন ম্যাজিস্ট্রেট নেই ডিসি অফিসের মাধ্যমে আমাদের মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হয় তবে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।