কখনো চুল বড়, কখনো গোঁফ আবার কখনো দাড়ি বড় করে ১০ বছর পালিয়ে ছিল লক্ষ্মীপুরের আলোচিত ১৩ বছর বয়সী স্কুলছাত্রী স্মৃতি রানী সিমাকে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সাদ্দাম। অবশেষে রাজধানীর উত্তরা থেকে ধরা পড়ল র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-এর জালে।
রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর টিকাটুলিতে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য জানান জানান।
তিনি বলেন, বিভিন্ন পরিচয়ে চেহারা পরিবর্তন করে দীর্ঘ ১০ বছর পলাতক থাকা সাদ্দাম হোসেন রহিম আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার রাতে র্যাব-৩ রাজধানীর উত্তরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, ‘আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, সে ডাকাত দলের একজন সক্রিয় সদস্য। তারা আগে থেকে পরিকল্পনা করে ডাকাতির স্থান নির্ধারণ করে এক জায়গায় মিলিত হয়ে সুযোগ বুঝে ডাকাতি করত। ডাকাতিকালে হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধরনের নৃশংস কর্মকাণ্ড করত তারা।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, ২০১২ সালের ১৯ জুলাই। লক্ষ্মীপুরের কৃষ্ণলাল দেবনাথের বাড়িতে মুখোশ পরে হামলা করে ১৪ থেকে ১৫ জন ডাকাত। পরিবারের সবাইকে বেঁধে পিটিয়ে জখম করে ঘরে বন্ধ করে রাখে। অন্য ঘরে কৃষ্ণলালের নাতনি স্মৃতি রানী সীমাকে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। সেই সঙ্গে স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৮০ হাজার টাকা মূল্যের মালামাল নিয়ে পালিয়ে ডাকাতদল।
তিনি বলেন, পাশবিক অত্যাচারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ১৩ বছরের সীমার। এ ঘটনায় কৃষ্ণলাল দেবনাথ বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ১৪-১৫ জনকে আসামি করে ডাকাতি, ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে সদর থানায় মামলা করেন।
ঘটনার তদন্ত শেষে ২০১৪ সালে ১০ জন আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন আদালত। ফাঁসির আসামিদের মধ্যে ৪ জন এবং যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামির মধ্যে ১ জন পলাতক থেকে যায়। দীর্ঘ ১০ বছর পর শনিবার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ডাকাত দলের সদস্য মো. সাদ্দাম হোসেন রহিমকে রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেফতার করে র্যাব-৩।
আরিফুর রহমান জানান, গ্রেফতার ব্যক্তির তথ্যের ভিত্তিতে আন্তঃজেলা ডাকাতদের ধরতে গোয়েন্দা তৎপরতা চলছে।