মাগুরার শ্রীপুরে অপহরণের ১২ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও উদ্ধার হয়নি মোছা. লাবণী (১৫) নামে এক মাদ্রাসাছাত্রী। এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে শ্রীপুর থানায় একটি অপহরণ মামলা করা হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, লাবণীর বাড়ি শ্রীপুর উপজেলায়। সে তখলপুর হাতেম আলী দাখিল মাদ্রাসার ছাত্রী। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি সকালে বাড়ি থেকে মাদ্রাসার উদ্দেশে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। পরে পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে ও আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন।
এর দুইদিন পর বাবা জানতে পারেন, তার মেয়ে ওইদিন বাড়ি থেকে বের হয়ে মাদ্রাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে ফুলতলা মোড়ে পৌঁছানোর আগে শিবলু মোল্যা (২৮) নামে এক যুবক দলবল নিয়ে তাকে অপহরণ করেছে। পরে ১৬ ফেব্রুয়ারি তিনি বাদী হয়ে চার জনের নাম উল্লেখ করে শ্রীপুর থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন।
এ মামলায় শ্রীপুর উপজেলার তখলপুর গ্রামের বিষে মোল্যার ছেলে শিবলু মোল্যা (২৮), মেয়ে সোহাগী আক্তার মীম (২৫), মো. পিয়ারুল ইসলাম (২৮), মোহাম্মদ আলী জোয়ার্দারকে (২৮) আসামি করা হয়।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিবলু মোল্যা পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী। সে স্কুল ছাত্রী লাবণীকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু লাবনী প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ১৪ ফেব্রুয়ারি তাকে জোর করে তুলে নিয়ে যায় শিবলুসহ তার ৩ সহযোগী। শিবলু এভাবেই ৩ টি বিয়ে করেছে। দুই স্ত্রী তাকে ছেড়ে গেলেও সে দুই সন্তানের জননী দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে সংসার করছিল।
মেয়েটির বাবা বলেন, ‘আমার মেয়েকে উদ্ধারের জন্য পুলিশ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করেও তার কোনো সন্ধান পাইনি। আমি আমার মেয়েকে ফেরত চাই।’
অভিযুক্ত শিবলু মোল্যার মা আকলিমা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতো। আমার ছেলে ৩ টা বিয়ে করেছে। সে ঘসিয়াল শ্বশুর বাড়িতে থাকতো। মাঝে মধ্যে বাড়িতে আসতো। এখন কোথায় আছে জানি না।’
তখলপুর হাতেম আলী দাখিল মাদ্রাসার সহকারী সুপার জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘লাবণী খাতুন আমাদের মাদ্রাসার ছাত্রী। সে মাদ্রাসায় নিয়মিত আসতো না। সবশেষ সে ১১ ফেব্রুয়ারি মাদ্রাসায় আসছিল। মাদ্রাসায় দুই-তিন দিন মাদ্রাসায় না এলে আমরা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে খোঁজখবর নিয়ে থাকি। তার খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তাকে পাওয়া যাচ্ছে না।’
হাতেম আলী দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্রী মায়া খাতুন ও সুমী খাতুন জানায়, সে নিয়মিত মাদ্রাসায় আসতো না। আর কোনো বিষয় তাদের সঙ্গে শেয়ার করতো না।
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ তাসমীম আলম জানান, ওই ছাত্রীকে উদ্ধারের জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে। একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।