এবার দেশি-বিদেশি পর্যটক আকর্ষণ ও নিরাপত্তায় নেয়া হলো মহাপরিকল্পনা। এর মাধ্যমে দেশের দেড় হাজার পর্যটন স্পটের উন্নয়ন করবে সরকার। ৫৩টি ক্লাস্টারের মধ্যে ৮ বছরে উন্নয়ন করা হবে ১৯টির। যা বাস্তবায়নে বিদেশি বিনিয়োগে গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ড (বিটিবি)। তবে দফতরগুলোর সমন্বয় না হলে বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ দেখছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
বৈচিত্র্যময় এক রূপের দেশ বাংলাদেশ। প্রকৃতির নানা সৌন্দর্যের সঙ্গে ঋতুভেদ যার পার্থক্য তুলে ধরেছে অঞ্চল, মাটি আর আবহাওয়ার ভিন্ন ভিন্ন মহিমায়। এত সব আকর্ষণীয় স্থান প্রকৃতির নিজস্ব স্বকীয়তার পাশাপাাশি কোথাও গড়ে উঠেছে সরকারি ব্যবস্থাপনায়, কোথাও রয়েছে ব্যক্তি উদ্যোগ।
পর্যটনের এসব স্পট আকৃষ্ট করলেও নানা অব্যবস্থাপনায় উপভোগ করতে পারেন না পর্যটকরা। তাছাড়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে যাতায়াত এবং সচেতনতা না থাকায় নষ্ট হয় প্রকৃতিক অবকাঠামো। তাই টেকসই উন্নয়নে এবার দেশজুড়ে পর্যটনে আকর্ষণীয় এক হাজার ৪৯৮টি স্থানকে ভাগ করা হয়েছে ৫৩টি ক্লাস্টারে। মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে এরমধ্যে প্রথম পর্যায়ে অগ্রাধিকারভিত্তিতে সংস্কার ও উন্নয়ন করা হবে ১৯টি ক্লাস্টারকে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সিইও আবু তাহের মোহাম্মদ জাবের বলেন, শ্রীমঙ্গল যদি একটি পর্যটন কেন্দ্র হয়, তাহলে আশপাশে আরও যে সব পর্যটন আকর্ষণ আছে, সেগুলো নিয়ে একটি ক্লাস্টার করা হবে।
ট্যুরিস্ট জোনের উন্নয়নে ইকো ট্যুরিজম ও হেরিটেজ বা ঐতিহ্যপূর্ণ স্থানগুলোতে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার কথা জানিয়েছে বিটিবি প্রধান।
তিনি বলেন, আমরা যে প্রকল্পগুলো তৈরি করব, সেগুলোতে আমরা আমাদের ডেভেলপমেন্ট পার্টনারদের অনুরোধ করব, বিশেষ করে ইকোট্যুরিজমে উন্নয়নের বিনিয়োগ করতে। পাশাপাশি আমরা হেরিটেজ ট্যুরিজম উন্নয়নেও বিনিয়োগের জন্য অনুরোধ করব।
এদিকে পর্যটন খাতে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে দায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বিভাগসহ সড়ক ও যোগাযোগ বিভাগ, এলজিইডি, স্থাপত্য দফতর, নৌপরিবহন বিভাগ, পরিবেশ ও বন বিভাগসহ ১০টি মন্ত্রণালয়ের। আনুষঙ্গিক কাজে এসব দফতরকে একযোগে কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
এ প্রসঙ্গে পর্যটন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল হক বলেন, মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য বিশেষজ্ঞসুলভ জ্ঞান, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও অবকাঠামো দরকার। পর্যটন হচ্ছে বহুমুখিখাত নিয়ে গঠিত একটি শিল্পখাত। এখানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য অনেক মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। কাজেই আমরা সমন্বিত পরিকল্পনা করে সেটিতে কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পারব, সেটিই হচ্ছে বড় প্রশ্ন।
মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের সেবার মান বৃদ্ধি, বাংলাদেশের সংস্কৃতিক ও আকর্ষণ প্রচার, পর্যটকদের অতিথি পরায়ন ও নিরাপদ পরিবেশ তৈরিতে জোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।