আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) শুনানিতে অংশ নিয়ে ইসরাইলের নিরাপত্তায় জোর দিয়ে অদ্ভুত এক আবদার জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি বলেছে, ফিলিস্তিনের দখল করা ভূখণ্ড ছেড়ে চলে যাওয়ার বিষয়ে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেয়ার আগে ইসরাইলের ‘নিরাপত্তার নিশ্চয়তা’ দিতে হবে।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) শুনানিতে বেশিরভাগ দেশের প্রতিনিধিরা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলের দখলদারিত্ব অবসানের দাবি জানালেও, যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আদালতে যুক্তি তুলে ধরে।
শুনানিতে অংশ নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ভারপ্রাপ্ত আইন উপদেষ্টা রিচার্ড ভিসেক বলেন, নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত না করা পর্যন্ত দখল করা পশ্চিম তীর ও গাজা ভূখণ্ড থেকে সরে যেতে ইসরাইলকে আইনিভাবে সরে যেতে বাধ্য করা উচিত হবে না।
তিনি আরও বলেন, আদালতের এই সিদ্ধান্তে আসা উচিত হবে না যে দখল করা ভূখণ্ড থেকে অবিলম্বে ও শর্তহীনভাবে ইসরাইলকে সরে যেতে হবে। এ ভূখণ্ড থেকে ইসরাইলের সরে যেতে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার আগে ইসরাইলের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে।
শুনানিতে রিচার্ড ভিসেক আরও বলেন, ‘জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এবং সাধারণ পরিষদ উভয়ই আলোচনার মাধ্যমে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ প্রতিষ্ঠা করেছে, যা মূলত শান্তির জন্য ভূমির বিনিময় সম্পর্কে হবে। স্থায়ী শান্তির জন্য এ দুটি ভারসাম্যপূর্ণ উপাদানের অগ্রগতি প্রয়োজন।’
মার্কিন এই প্রতিনিধি আরও বলেন, ‘ওয়াশিংটন সংঘাতে আইসিজের ভূমিকা নাকচ করে দিচ্ছে না বরং আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চূড়ান্ত প্রয়োজনের আলোকে সাবধানে তার পরামর্শটি ধারাবাহিক করার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করছে।’
শুনানিতে অংশ নেয়া প্রায় সব দেশই যুক্তি দিয়ে বলছে, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ইসরাইল সরকারের দৃঢ় বিরোধিতার মুখে আইসিজে থেকে ‘নিষ্পত্তিমূলক হস্তক্ষেপ’ প্রয়োজন।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আহ্বানে দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে নির্দেশনা ও মতামত দিতে এই শুনানি চলছে। গত সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে অবস্থিত জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে শুরু হওয়া এই শুনানিতে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে অর্ধশতাধিক দেশ ও তিনটি সংস্থা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবে।
এদিকে, মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) গাজায় চলমান হামাস-ইসরাইল যুদ্ধে মানবিক যুদ্ধবিরতির জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাবে আবারও ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
আলজেরিয়ার প্রস্তাবিত এই খসড়া প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়ে এ দিন ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় ১৩টি দেশ। তবে ভোটদানে বিরত থাকে যুক্তরাজ্য।