দেশের জ্বালানি খাতে অস্থিরতা যেন থামছেই না। একদিকে যেমন বাড়ছে বিদ্যুতের উৎপাদন, তেমনি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দাম। আসছে মার্চে আবারও বিদ্যুতের দাম বাড়তে পারে; সঙ্গে থাকবে জ্বালানি তেল ও গ্যাসও।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সংবাদমাধ্যমকে জানান, পাইকারি এবং খুচরা (ভোক্তা) পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করা হবে। যদিও এতে ভোক্তাদের ওপর খুব বেশি প্রভাব পড়বে না। কারণ সেভাবেই দাম সমন্বয় করা হবে।
খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ে ৩ থেকে ৪ শতাংশ দাম বাড়ানো হতে পারে বলে তার কথায় আভাস পাওয়া গেছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, ভোক্তা পর্যায়ে ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত প্রতি ইউনিটে ২৫ থেকে ৩০ পয়সা দাম বাড়তে পারে। তবে মাসে ৬০০ ইউনিটের বেশি ব্যবহারকারীদের প্রতি ইউনিটে ৭০ থেকে ৮০ পয়সা বাড়তে পারে।
এর আগে, ২০২৩ সালের মার্চ থেকে খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন সরকার বলেছিল, নিয়মিত মূল্য সমন্বয়ের অংশ হিসেবে দাম বাড়ানো হয়েছে।
শুধু যে বিদ্যুৎ তা নয়, দাম বাড়বে জ্বালানি তেল ও গ্যাসেরও। গত বছরের ১৮ জানুয়ারি শিল্পসহ অন্যান্য খাতে গ্যাসের দাম গড়ে ৮০ শতাংশ বাড়ানো হয়। এখন নতুন করে আবার শুধু বিদ্যুৎ খাতের জন্য গ্যাসের দাম বাড়ানো হতে পারে। বর্তমানে বিদ্যুৎ খাতের জন্য প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম ১৪ টাকা। প্রতি ইউনিট গ্যাসের পেছনে সরকারের এখন খরচ হচ্ছে গড়ে ২৪ টাকা। এলএনজি আমদানির জন্যই গ্যাসের খরচ বাড়ছে।
জ্বালানি তেলের দাম স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমন্বয়ের একটি সূত্র তৈরি করেছে জ্বালানি বিভাগ। এর আওতায় প্রতি মাসে বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দাম সমন্বয় করা হবে। বিশ্ববাজারে বাড়লে দেশে বাড়বে, কমলে দেশে কমবে। এটি গত বছরের সেপ্টেম্বরে চালুর কথা থাকলেও তা হয়নি। তবে এটাও মার্চ থেকে চালু হতে পারে।
নসরুল হামিদ সাংবাদিকদের আরও জানান, সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়ে গেছে ডলারের রেট। আগে ডলার ৭৮ টাকায় পাওয়া যেত। এখন প্রায় ১২০ টাকার মতো হয়ে গেছে। এক ডলারে প্রায় ৪০ টাকার মতো বেশি খরচ হচ্ছে। এতে বিশাল ঘাটতি তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম অপরিবর্তিত থাকলেও ডলারের মূল্য বাড়ার কারণে দাম সমন্বয় জরুরি হয়ে পড়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী মার্চ থেকেই আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে যুক্ত করা হবে জ্বালানি তেলের দাম। নতুন দর প্রথম সপ্তাহ থেকেই কার্যকর করা হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে আমাদের এখানেও দাম বাড়বে; আর কমে গেলে কমবে।’