ওয়াশিংটন ডিসির জন চিকস যখন জানলেন তিনি ৩শ ৩৭ মিলিয়ন ডলার লটারি জিতেছেন; তখন তিনি যেন আকাশে উড়ছিলেন। কিন্তু লটারির টাকা দাবি করতে গিয়ে ধপ করে আকাশ থেকে পড়লেন। লটারির বিজয়ী নম্বর ও তার টিকিটের নম্বর হুবহু মিলে গেলেও, নিয়ম না মানার অজুহাতে তারা জনকে বিজয়ী মেনে নিতে অস্বীকার করেছেন। তারা জনকে টাকা না দিয়ে লটারির টিকিটটি আবর্জনার বাক্সে ফেলে দিতে বললেন। কিন্তু হাল ছাড়েননি জন। ‘পাওয়ারবল ও ডিসি লটারি’র বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি।
২০২৩ সালের ৬ জানুয়ারি পাওয়ারবল লটারির টিকিট কিনেছিলেন জন। পরের দিন পাওয়ারবল ড্রয়িংয়ে না দেখে, দুদিন পর ডিসি লটারির ওয়েবসাইটে বিজয়ী তার নম্বর খুঁজে পেয়ে অবাক হয়েছিলেন জন। কিন্তু পাওয়ারবল এবং ডিসি লটারি কর্তৃপক্ষ দাবি করে যে, তার নম্বরগুলো ভুলবশত প্রকাশিত হয়েছে।
লটারি জিতে এনবিসি ওয়াশিংটনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জন চিকস বলেন, ‘আমি একটু অবাক হয়েছি, কিন্তু আমি চিৎকার, হৈচৈ করিনি। আমি শুধু মাথা ঠাণ্ডা করে আমার এক বন্ধুকে ফোন করেছি। সে যা বলেছে আমি তা শুনেছি। এবং উঠে ঘুমাতে চলে গেছি।’
এরপর লটারি এবং গেমিং অফিসে (ওএলজি) তার টিকিটটি জমা দেয়ার পর তারা জনের লটারি জেতার বিষয়টি অস্বীকার করে।
প্রতিবেদন অনুসারে, আদালতের নথিতে বলা হয়েছে যে, কর্তৃপক্ষ জন চিকসের জ্যাকপট খেলার লটারি জেতার দাবি অস্বীকার করেছেন। একটি চিঠিতে তারা ব্যাখ্যা করেছেন যে, জনের পুরস্কারের দাবি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। কারণ ওএলজি এর খেলার প্রক্রিয়ার সঙ্গে টিকিটের বিজয়ী হিসাবে জন বৈধ নিয়ম রক্ষা করেননি।
বিবিসিকে জন জানান, তাদের একজন তাকে বলেছিল যে, ‘তোমার টিকিটটি ভালো না। এটা আবর্জনার বাক্সে ফেলে দাও।’
জন চিকস তার টিকিট ফেলে না দিয়ে বরং একটি নিরাপদ ডিপোজিট বাক্সে রেখে দিয়েছিলেন। এই এক বছরের মধ্যে জন পাওয়ারবলের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছেন। জনের দায়ের করা মামলায় মাল্টি-স্টেট লটারি অ্যাসোসিয়েশন এবং গেম পরিচালক তাওতি এন্টারপ্রাইজের নামও রয়েছে। জন তার মামলায় আটটি অভিযোগ করেছেন। যার মধ্যে চুক্তির লঙ্ঘন, অবহেলা, মানসিক যন্ত্রণা এবং জালিয়াতি রয়েছে।
এখন এই লটারিবাবদ ক্ষতিপূরণ দাবি করছেন জন। জ্যাকপট লটারি তো আছেই; তারপরও প্রতিদিনের সুদসহ মোট ৩৪০ মিলিয়ন ডলার তিনি দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির কাছে।
তার আইনজীবী রিচার্ড ইভানসের দাবি, যেহেতু জনের লটারির সঙ্গে বিজয়ী নম্বর পুরোপুরি মিলে গেছে তাই জ্যাকপটের পুরো টাকাটাই জনের প্রাপ্য।
এক বিবৃতিতে ইভানস বলেন, এই মামলাটি লটারি পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানটির সততা এবং জবাবদিহিতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। পাওয়াবল এবং ডিসি লটারি যে ধরণের ভুল করেছে তাতে তাদের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে বলে জানান ইভানস। এটি শুধু এবটি ওয়েবসাইটের নম্বরজনিত ভুল নয়, বলেন তিনি।
এই মামলার শুনানির তারিখ পড়েছে ২৩ ফেব্রুয়ারি।