Homeসর্বশেষ সংবাদমেট্রোরেলে নারী কণ্ঠে ভয়েস দেয়া মেয়েটি কে জানেন?

মেট্রোরেলে নারী কণ্ঠে ভয়েস দেয়া মেয়েটি কে জানেন?

মেট্রোরেল চলাচলের সময় দিকনির্দেশনার জন্য কিছুক্ষণ পরপর নারী কণ্ঠের ভয়েস শোনা যায়। ব্যস্ত নাগরিক জীবনকে সহজ করতে দুর্বার এই মেট্রোতে তার ভয়েস নির্বাচনেও হয়েছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। তার নাম কিমিয়া অরিন। বর্তমানে থাকেন কানাডাতে।

কিমিয়া অরিন সম্প্রতি একটি সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। জানান তার কণ্ঠের যাত্রাপথের ধারাবাহিকতা নিয়ে। কিমিয়া বলেন, তিনি বাংলাদেশে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করেছেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনে ইংরেজি সংবাদ পাঠিকা হিসেবে কাজ করেছেন। কাজ করেছেন বাংলাদেশ বেতারেও।

দেশে ৯ বছর কাজ করার পর তিনি বর্তমানে মাস্টার্স করার জন্য কানাডা গিয়েছেন। আগামী বছর পড়াশোনা শেষ করবেন কিমিয়া। তার পরিবারে রয়েছেন তার স্বামী এবং ছোট ভাই। কিমিয়ার স্বামীর ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি রয়েছে।

শুরুর দিকে সবাইকে বললে কেউ বিশ্বাস করতো না এটা তার ভয়েস। সবাই ভাবতো এটি মেশিন জেনারেটেড ভয়েস। কিন্তু আমি লিংক দিয়ে বলতাম, না আমি এই ভয়েস দিয়েছি, বলেন কিমিয়া।

তিনি আরও বলেন, শুরুতে যখন আমি মেট্রোরেলে নিজের ভয়েস শুনি, খুবই এক্সাইটেড হয়ে গিয়েছিলাম। সবাই আমার দিকেনির্দেশনা শোনার জন্য অপেক্ষা করছে, এটি দারুণ ব্যাপার মনে হয়েছে। ভীষণ ভরসার, ভালো লাগার।

শুরুর গল্প হিসেবে কিমিয়া বলেন, প্রথম দিকে বিটিভির একজন রিপোর্টার আমাকে বললেন, আপনি মেট্রোরেলে ভয়েস দিতে চাইলে সিভি দিতে পারেন। আমি তার কথায় সিভি দেই। কাজের স্যাম্পল হিসেবে আমার ইউটিউব থেকে ভিডিওগুলোও দেয়া হয়। শুরুতে হয়েছিল টিকিট ভেন্ডিং মেশিনের কাজ। তখন ছিল করোনাকালীন সময়ের মাঝের দিক। অনেকবার ভয়েস দেয়ার পর নানাভাবে বিশ্লেষণ করে সর্বশেষ কিমিয়া অরিনের ভয়েসটিই নির্বাচিত হয়। আর এখন তার ভয়েসটিই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

বর্তমানে মেট্রোরেল ১৭৮ বার যাতায়াত করছে। গড়ে প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার যাত্রী পরিবহন করে। আর প্রতিদিন একটি ট্রেনে ১ হাজার ৭৫০ জন যাত্রী যাতায়াত করছেন।

মেট্রোরেলের উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশের চলাচল শুরু হয় ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর। এর একদিন আগে ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেল উদ্বোধন করেন। আর গত ৫ নভেম্বর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশে যাত্রী চলাচল শুরু হয়। এরও একদিন আগে ৪ নভেম্বর প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

উত্তরা থেকে মতিঝিল ও কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ২১.২৬ কিলোমিটারের পুরো রুটটি ৪০ মিনিটেরও কম সময়ে ভ্রমণ করে মেট্রোরেল প্রতি ঘণ্টায় ৬০,০০০ যাত্রী বহন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালের ২৪ জুন এমআরটি লাইন-৬ নামে পরিচিত মেট্রোরেল প্রকল্পের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। প্রকল্পটির ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। শুরুতে এই প্রকল্পের ব্যয় ছিল প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। মূলত মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১.৬ কিলোমিটার বাড়তি অংশ নির্মাণ, প্রতিটি স্টেশনের জন্য নতুন করে জমি অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন নতুন অনুষঙ্গ যুক্ত হওয়ায় খরচ বেড়েছে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা।

মেট্রোরেল প্রকল্প নেয়া হয় ২০১২ সালে। জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকার সঙ্গে ঋণচুক্তি হয় পরের বছর। মূল কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে।

সর্বশেষ খবর