এমএলএসের নতুন মৌসুমের ম্যাচে মাঠে নামতে প্রস্তুত লিওনেল মেসি। রিয়াল সল্ট লেকের বিপক্ষে ইন্টার মায়ামির ম্যাচ দিয়েও শুরু হচ্ছে এমএলএসের নতুন মৌসুম। তবে এখন পর্যন্ত ইন্টার মায়ামির মহাতারকা আলোচনায় অন্য এক ঘটনায়। মৌসুম শুরুর আগে প্রস্তুতি নিতে এশিয়া সফরে বেরিয়েছিল ইন্টার মায়ামি। এই সফরেই হংকংয়ে এক ম্যাচে মেসির না খেলা নিয়ে অনেক জল ঘোলা হয়েছে। যার রেশ আছে এখনও।
প্রাক-মৌসুম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে দলগুলো বিভিন্ন দেশে সফর করে থাকে। এমএলএসের নতুন মৌসুম শুরুর আগে লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামি এশিয়া সফরে নামে। সৌদি আরবে আল হিলাল ও আল নাসরের বিপক্ষে দুই ম্যাচে নাস্তানাবুদ হওয়ার পর হংকংয়ে খেলতে যায় ইন্টার মায়ামি। সেখানে হংকং লিগ একাদশের সঙ্গে একটি ম্যাচ খেলে মায়ামি। কিন্তু অ্যাডাক্টর পেশির চোট থাকায় সে ম্যাচে খেলেননি মেসি।
মেসি-সুয়ারেজের দলের বিপক্ষে এই ম্যাচের জন্য টিকিটের দাম ছিল আকাশচুম্বী। কিন্তু তারপরও প্রিয় তারকার খেলা একনজর দেখতে উচ্চ মূল্য পরিশোধ করেই টিকিট কেটে মাঠে এসেছিল দর্শকরা। ৩৮ হাজার ধারণক্ষমতার মাঠ ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। কিন্তু মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করেও এক মুহূর্তের জন্যও মেসিকে খেলতে দেখতে না পাওয়ায় বেজায় চটেন দর্শকরা। তারা মাঠেই মেসি ও ইন্টার মায়ামির নাম ধরে দুয়ো দেন। আয়োজকদের কাছে অর্থ ফেরত চেয়ে গ্যালারিতে স্লোগানও দিয়েছিলেন তারা।
শুধু দর্শকরাই নয়, বিষয়টি নিয়ে হংকংয় সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও কথা বলেন। এ বিষয়ে আয়োজকরা জানান, মেসি যে খেলবেন না, এটা তাদের আগে জানানো হয়নি। বিষয়টি ম্যাচ শুরুর কিছুক্ষণ আগে তারা জানতে পারেন। আর ক্লাব ইন্টার মায়ামি বিষয়টি নিয়ে ব্যাখ্যা দেয় ম্যাচ শেষের খানিক পরেই।
হংকংয়ে মেসির না খেলার জের ধরে পরবর্তীতে আর্জেন্টিনার চীন সফর বাতিল হয়েছে। মার্চে চীনের হাংজু ও বেইজিংয়ে আফকনের দুই ফাইনালিস্ট নাইজেরিয়া ও আইভরি কোস্টের বিপক্ষে আর্জেন্টিনা দলের ম্যাচ খেলার কথা ছিল। কিন্তু প্রথমে হাংজু কর্তৃপক্ষ ও পরে বেইজিংয়ের কর্তৃপক্ষ ম্যাচ বাতিল করে দেয়।
এইসব নিয়ে মেসি বেশ বিতর্ক। হংকংয়ে তার না খেলা নিয়ে ‘সম্পূর্ণ অসত্য’ খবর ছড়িয়ে পড়েছে বলে দাবি করেন তিনি। এ বিষয়ে এক ভিডিওবার্তায় বিবৃতিও দিয়েছেন মেসি।
চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ওয়েইবোতে পোস্টকৃত এই ভিডিওবার্তায় মেসি বলেন, ‘হংকংয়ের ম্যাচের পর অনেক কিছু বলা হয়েছে যা আমি শুনেছি ও পড়েছি। তাই আমি এই ভিডিওটি রেকর্ড করতে চেয়েছি এবং আপনাদের সত্যিটা জানাতে চেয়েছি। যেন কেউ আর মিথ্যা খবরগুলো না পড়ে।’
চীনের কিছু রাজনীতিবিদ এই ঘটনার পর দাবি করেছিল, ফিট থাকার পরও চীনকে ছোট করতেই মেসি ম্যাচটি খেলেননি। মেসি ভিডিওতে বলেন, ‘মানুষ এটাও বলছে রাজনৈতিক ও অন্যান্য কারণে আমি ম্যাচটা খেলিনি, যা সম্পূর্ণ অসত্য। যদি এটা সত্য হতো তবে আমি চীন বাঁ জাপান সফরেই যেতাম না। আমি অনেকবার সেখানে গিয়েছি। ক্যারিয়ার শুরুর পর থেকে চীনের সঙ্গে আমার খুবই ঘনিষ্ঠ ও বিশেষ সম্পর্ক আছে। চীনে আমি অনেককিছু করেছি।’
হংকংয়ের বিপক্ষে না খেললেও দিন কয়েক পরেই জাপান সফরে ভিসেল কুবের বিপক্ষে ম্যাচে খেলতে নামেন মেসি। এরপর হংকং সরকার ইন্টার মায়ামির কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে বসে, কেন মেসিকে ভিসেল কুবের বিপক্ষে খেলানো হলো?
সেই ব্যাখ্যা অবশ্য ভিসেল কুবের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে সংবাদ সম্মেলনেই দিয়েছিলেন মেসি। সেই সংবাদ সম্মেলনের কথার রেশ টেনেই ভিডিওতে কারণ দর্শান মেসি। তিনি বলেন, ‘যেমনটা আমি সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলাম, আমার অ্যাডাক্টরে সমস্যা হয়েছিল এবং সৌদি আরবে প্রথম ম্যাচটা খেলতে পারিনি। (সৌদি আরবে) দ্বিতীয় ম্যাচে আমি কিছু সময় খেলেছি। কিন্তু সমস্যা আরও বেড়েছে। এরপর হংকংয়ে ম্যাচের আগের দিন আমি অনুশীলনের চেষ্টা করেছি।’
মেসি যোগ করেন, ‘কয়েক দিন পর আমি একটু ভালো অনুভব করি। এ কারণেই আমি জাপানে কিছুটা সময় খেলতে পেরেছি। ফিট হয়ে উঠতে এবং গতি ফিরে পেতে আমাকে খেলতেও হতো।’