আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে ভারতের কৃষক আন্দোলন। কেন্দ্রে আসীন বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তারা। এরই অংশ হিসেবে ১৪৪ ধারা ভেঙে নয়াদিল্লি অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেছে তারা। এতে করে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়েছে গাজিপুর ও চিল্লা বর্ডার মহাসড়কে।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদ ও নয়ডার সঙ্গে দিল্লিকে সংযুক্তকারী গাজিপুর এবং চিল্লা সীমান্তের মহাসড়কে সারি সারি গাড়ি দেখা গেছে।
ডিএনডি ফ্লাইওভারে আটকে থাকা এক যাত্রী এনডিটিভিকে বলেন, ৩০ মিনিট ধরে যানবহন একই স্থানে আটকে আছে। এক ঘণ্টায় তিনি মাত্র ১ কিলোমিটার যেতে পেরেছেন।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ বলছে, রাস্তাটি পুরোপুরি বন্ধ নয়। খুব পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে চেকিং করা হচ্ছে।
বিক্ষোভকারী কৃষকদের দিল্লিতে প্রবেশে বাধা দিতে গাজিপুর, সিংগু এবং টিকরিসহ বেশ কয়েকটি সীমান্ত পয়েন্টে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশসহ বিভিন্ন রাজ্যে সক্রিয় কৃষক সংগঠনগুলোর দুই জোট কিষান মজদুর মোর্চা এবং সংযুক্ত কিষান মোর্চা এই পদযাত্রা কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। কিষান মজদুর মোর্চায় অন্তর্ভুক্ত সক্রিয় কৃষক সংগঠনের সংখ্যা ২৫০টি এবং সংযুক্ত কিষান মোর্চাভুক্ত সংগঠনের সংখ্যা ১৫০টি।
কিষান মজদুর মোর্চা ও সংযুক্ত কিষান মোর্চার নেতারা জানিয়েছেন, ২০২০ সালের আন্দোলনের সময় নতুন কৃষি আইন বাতিলসহ ৩টি দাবি জানিয়েছিলেন কৃষকরা। দাবিগুলো হলো— (ক) ফসলের ন্যূনতম ক্রয়মূল্য বৃদ্ধি, (খ) কৃষি ঋণের শর্ত সহজ করা ও সুদ মওকুফ এবং (গ) স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশগুলোর বাস্তবায়ন।
কৃষকনেতাদের অভিযোগ, ২ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার।
এ ইস্যুতে সোমবার কেন্দ্রীয় সরকারের খাদ্য ও ভোক্তা অধিকার বিষয়ক মন্ত্রী পীযুষ গয়াল এবং কৃষিমন্ত্রী অর্জুন মুণ্ডার সঙ্গে মধ্যরাত পর্যন্ত বৈঠক করেছেন কিষান মজদুর মোর্চা ও সংযুক্ত কিষান মোর্চার নেতারা। কিন্তু সেই বৈঠক থেকে কোনো মিমাংসা আসেনি।
কিষান মজদুর মোর্চার অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা সারওয়ান সিং পান্ধের ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকে পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও মধ্যপ্রদেশের কৃষকরা পদযাত্রা ও ট্রাক্টরযাত্রা শুরু করেছেন।
এনডিটিভিকে সারওয়ান সিং পান্ধের বলেন, ‘দুই বছর আগে সরকার লিখিতভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে আমাদের সব দাবি দাওয়া তারা মেনে নেবে….আমরা ইস্যুটি শান্তিপূর্ণভাবে মিমাংসা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সরকারের এক্ষেত্রে আন্তরিকতার গুরুতর অভাব দেখা যাচ্ছে। তারা কেবল সময়ক্ষেপণ করতে চাইছে।’