২০১৯ সালের কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল ব্রাজিল। সেদিন রবার্তো ফিরমিনো ও গ্যাব্রিয়েল জেসুস গোল করে জয় এনে দিয়েছিলেন সেলেসাওদের। এরপর ফাইনালে পেরুকে হারিয়ে নবমবারের মতো মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা ঘরে তোলে ব্রাজিল। সেই সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়ার পর লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা বলতে গেলে বদলে গেছে। এরপর কাতার বিশ্বকাপ পর্যন্ত টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থাকে মেসির দল, যা আন্তর্জাতিক ফুটবল ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ টানা অপরাজিত থাকার রেকর্ড।
হার থেকে যদি হয় ভালো কিছু, তবে হয়ত এমন হার আরও হারতে চাইবে আর্জেন্টিনা। ২০১৯ এর কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে সেই যে ব্রাজিল তাদের হারিয়েছিল, এরপর থেকেই আকাশি-সাদা জার্সিধারীরা অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ব্রাজিলের কাছে অজেয় হয়ে উঠেছে আর্জেন্টিনা। ২০২১ সালে পরবর্তী কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিলকে ঘরের মাঠে হারিয়ে এসেছে আর্জেন্টিনা। যা ছিল ১৯৯৩ সালের পর আর্জেন্টিনার প্রথম আন্তর্জাতিক শিরোপা।
অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার একমাত্র গোলে কোপা আমেরিকার ফাইনালে জয়ের পর আর্জেন্টিনা আরও দুটি শিরোপা জিততে সমর্থ হয়েছে। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন ইতালিকে উড়িয়ে লা ফিনালিসিমা জয় করে আর্জেন্টিনা। আর এরপরের শিরোপাটা তো মেসি ও তার দলকে অমরত্ব দান করেছে। ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ৩৬ বছর পর বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় আলবিসেলেস্তেরা।
অন্যদিকে ব্রাজিল ২০১৯ এর কোপা আমেরিকার শিরোপা জয়ের পর থেকেই হাঁটছে উল্টো পথে। কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নেয় তারা। আর ২০১৯ সালের পর থেকে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে মাঠে নামা মানেই যেন নিশ্চিত হার ব্রাজিলের। শুধু জাতীয় দলই নয়, আর্জেন্টিনার কাছে বয়সভিত্তিক ফুটবলেও নাজেহাল হচ্ছে সেলেসাওরা। সর্বশেষ আর্জেন্টিনার কাছে প্যারিস অলিম্পিকের বাছাই পর্বেও হেরেছে ব্রাজিল।
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) অলিম্পিক বাছাই পর্বের ম্যাচে ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারায় আর্জেন্টিনা। এই হারে প্যারিস অলিম্পিকের মূল পর্বে খেলার সুযোগ হারিয়েছে গত দুই আসরের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল।
এর আগে গত বছর নভেম্বরে ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের খেলায় ঐতিহ্যবাহী মারাকানা স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনার কাছে ১-০ গোলে হারে স্বাগতিক ব্রাজিল। সেই ম্যাচ চলাকালীন সময়ে মাঠে সমর্থকরা দাঙ্গায় জড়িয়ে পড়লে ফিফা দুই দলকেই শাস্তি দিয়েছে। এর আগে ২০২২ এর বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচেও আর্জেন্টিনাকে হারাতে পারেনি ব্রাজিল। সেবার অবশ্য ম্যাচ গোলশূন্য ড্রয়ে শেষ হয়।
গত বছর নভেম্বরে আরও এক টুর্নামেন্টে আর্জেন্টিনার কাছে নাস্তানাবুদ হয়েছে ব্রাজিল। অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ক্লদিও এচেভেরির হ্যাটট্রিকে ৩-০ গোলে ব্রাজিলকে হারায় আর্জেন্টিনা।
তবে ব্রাজিল যে একেবারেই সাফল্য পায়নি এমনটাও নয়। এ সময়ে অনূর্ধ্ব ২০ কোপা আমেরিকা টুর্নামেন্টে আর্জেন্টিনাকে হারিয়েছে ব্রাজিল। গ্রুপ স্টেজের সে ম্যাচে ব্রাজিলের কাছে ৩-১ গোলে হাড়ে আর্জেন্টিনা। এছাড়া গত শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) কোপা আমেরিকা ফুটসালের ফাইনালেও ব্রাজিলের কাছে ২-০ গোলে হেরে গেছে আলবিসেলেস্তেরা।