বছর ব্যবধানে আবারও ১০০ বিলিয়ন ডলারের ক্লাবে পদার্পণ করলেন ভারতের শিল্পপতি গৌতম আদানি। বর্তমানে তিনি ভারতের দ্বিতীয় এবং বিশ্বের ১২তম শীর্ষ ধনী ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এই প্রতিবেদন লেখার সময়ে ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ারস ইনডেক্স অনুসারে, ভারতীয় শিল্পপতি গৌতম আদানির মোট সম্পদমূল্য ১০১ বিলিয়ন ডলার। তার থেকে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে আছেন আরেক ভারতীয় ব্যবসায়ী মুকেশ আম্বানি। তার সম্পদের মূল্য ১০৮ বিলিয়ন ডলার। তিনি ভারতের শীর্ষ ধনী ব্যক্তি এবং বিশ্বের ১১তম শীর্ষ ধনী।
২০২৩ সালের শুরুর দিকে গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের করা অভিযোগের পর আদানির সম্পদের পরিমাণ কমে গেলেও মাত্র এক বছরের মধ্যে তিনি অধিকাংশ সম্পদ পুনরূদ্ধার করতে পেরেছেন। বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় এই ধনকুবেরের সম্পদের মূল্য ২ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার বেড়ে ১০০ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের আদানি গ্রুপকে বাজার কারসাজি এবং জালিয়াতির দায়ে অভিযুক্ত করার পর থেকে এটি তার সর্বোচ্চ সম্পদ।
গত সপ্তাহে কোম্পানিটি এক প্রতিবেদনে জানায় যে তাদের আয় ১৩০ শতাংশ বেড়েছে। এর পরপরই লাফিয়ে বাড়তে আদানি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের শেয়ারদর। টানা ৮ দিনের ধারাবাহিকতায় বুধবারও কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়ে। যদিও আদানির সম্পদ চলতি মাসের শুরুর দিকে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছিল, তবুও ২০২২ সালে তার যতটুকু সম্পদ ছিল, তার থেকে বর্তমানে তার সম্পদমূল্য ৫০ বিলিয়ন ডলার ঘাটতিতে আছেন।
হিন্ডেনবার্গের প্রতিবেদন প্রকাশের পর আদানির সম্পদের পাহাড়ে ধস নেমে তা সর্বনিম্ন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকে। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পরপরেই তিনি ৮০ বিলিয়ন ডলারের বেশি খুইয়ে ফেলেন। এক পর্যায়ে তার সম্পদ গিয়ে ঠেকে ৩৭ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারে। প্রতিবেদনটির প্রভাবে এক পর্যায়ে আদানি গ্রুপের বাজারমূল্য ১৫০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি কমে যায়। ফলে বিনিয়োগকারী ও ঋণদাতাদের ফিরিয়ে আনতে বেশ কাটখোড়া পোড়াতে হয়েছে কোম্পানির। ভারতের স্থানীয় বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাও এই বিষয়ে তদন্ত করা শুরু করেছিল।
পরে জানুয়ারিতে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট স্থানীয় বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে তিন মাসের মধ্যে আদানি গ্রুপের তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেয়। সে সময়ে আদালত থেকে জানানো হয় নতুন করে আর কোনো তদন্ত করার প্রয়োজন নেই। এতে আদানি গ্রুপের স্টকের মূল্য আবার দ্রুত গতিতে বাড়তে থাকে।
ক্যারিয়ারের শীর্ষে আদানি ১৫০ বিলিয়ন ডলার সম্পদের মালিক হয়েছিলেন এবং তিনি বিশ্বের তৃতীয় ধনী ব্যক্তি হিসাবে স্থানও অর্জন করেছিলেন। ২০২৩ সালে যে কারো তুলনায় বেশি সম্পদ হারানোর পরও ২০২৪ সালে আদানি ১৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার পুনরুদ্ধার করেছেন। ব্লুমবার্গের তথ্যমতে, যেটি বিশ্বের বড় ধনীদের মধ্যে সব থেকে বড় আর্থিক অগ্রগতির একটি।