প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পর্যায়ক্রমে সব উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম তৈরি করা হবে। এর মূল লক্ষ্য সব ধরনের খেলার পাশাপাশি দেশীয় খেলা যাতে হারিয়ে না যায়, সেটির চর্চা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। যাতে লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার মাধ্যমে সুস্থ নাগরিক হয়ে পরিবার, সমাজ এবং দেশের জন্য অবদান রাখতে পারে আজকের শিশুরা।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ৫২তম শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা-২০২৪-এর চূড়ান্ত পর্বের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন তিনি।
আন্তঃস্কুল, আন্তঃকলেজ ও আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন করার দরকার। এতে শরীর সুস্থ থাকে, প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব তৈরি হয়। কাজেই এর গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি – এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাগুলো যেন হারিয়ে না যায়, যেমন হাডুডু থেকে শুরু করে সব ধরনের দেশীয় খেলার চর্চা বাড়ানোর আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,
আমাদের ছেলে-মেয়েরা মেধাবী। সুযোগ করে দিলে তারা আরও ভালো করতে পারবে। সব ধরনের খেলাকে আমাদের আয়ত্তে আনতে হবে। আমাদের কিছু দেশীয় খেলা, সেই ডাংগুলি থেকে শুরু করে, বিভিন্ন খেলাধুলা আগে প্রচলিত ছিল। সেগুলো আমাদের আবার চালু করা উচিত। আমাদের নিজস্ব দেশীয় খেলাগুলো, হাডুডু থেকে শুরু করে সব খেলা সক্রিয় রাখতে উদ্যোগ নিতে হবে। আমাদের ছেলে-মেয়েরাসহ সবাই মিলে উদ্যোগ নেবে, যেন দেশীয় খেলাগুলো হারিয়ে না যায়।
তিনি আরও বলেন, ‘খেলাধুলাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে আমাদের। আমি চাই, আমাদের ছেলেমেয়েরা আরও বেশি উন্নত প্রশিক্ষণ নিক। তাদের উন্নত প্রশিক্ষণ দরকার। কাজেই আগে প্রশিক্ষক তৈরি করা একান্তভাবে দরকার। প্রতিটি বিভাগে ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) গড়ে তোলা হবে। যেন আমাদের ছোট্ট শিশুরা খেলাধুলায় আরও বেশি পারদর্শী হতে পারে। ছোট বেলা থেকে যদি শিশুদের খেলাধুলায় প্রশিক্ষণ দেয়া যায়, তাহলে তারা আগামীতে দক্ষতার পরিচয় দিতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন,
উপজেলা পর্যায়ে কয়েকটি মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব উপজেলায় এটি তৈরি করা হবে। যাতে আজকের শিশুরা লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার মাধ্যমে সুস্থ নাগরিক হয়ে পরিবার, সমাজ এবং দেশের জন্য অবদান রাখতে পারে। এটা (স্টেডিয়াম) তৈরি করার মূল লক্ষ্য হলো, তারা যেন কোনও না কোনও খেলার সাথে সারা বছর যুক্ত থাকতে পারে। ক্রিকেট ও ফুটবল স্টেডিয়াম তো আছে, সেগুলো আলাদা। কিন্তু উপজেলা পর্যায়ে কয়েকটি মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করার একটা লক্ষ্য হচ্ছে, সেখানে সব ধরনের খেলাধুলা হবে, প্রতিযোগিতা হবে; আন্তঃস্কুল, আন্তঃকলেজ ও আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় খেলার প্রতিযোগিতা আয়োজন করার জন্য।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা নিজেই খেলাধুলার প্রতি অত্যন্ত মনোযোগী ছিলেন। আমি মনে করি, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে বলে আমাদের ছেলে-মেয়েরা খেলাধুলার ব্যাপক সুযোগ পাচ্ছে। আন্তর্জাতিক পর্যায় পর্যন্ত তাদের দক্ষতার প্রমাণ রাখতে পারছে। জাতির পিতার উদ্যোগে স্বাধীনতার পর এই শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল। আমাদের পরিবার সবসময় খেলাধুলার সঙ্গে জড়িত ছিল। আমার দাদা নিজেই ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন, আমার বাবাও ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন এবং আমার ভাই জামাল, কামাল, রাসেল সবাই স্পোর্টসের সঙ্গে জড়িত ছিল। এমনকি কামালের স্ত্রী সুলতানা কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্লু উপাধি পেয়েছিল। জামালের স্ত্রী পারভীন জামালও খেলাধুলার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল। খেলাধুলার উন্নতি করাই আমাদের লক্ষ্য।
পরে তিনি বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।