জর্ডানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে হামলার শিকার ‘টাওয়ার ২২’ নামে পরিচিত মার্কিন সেনাঘাঁটি কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ঘাঁটি সম্পর্কে খুব বেশি তথ্যও নেই কারও কাছে। মার্কিন প্রশাসনও কঠোরভাবে এর গোপনীয়তা রক্ষা করে।
আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সামরিক ঘাঁটি থেকে একইসঙ্গে জর্ডান, সিরিয়া ও ইরাকে নজর রাখতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। এটি সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হুমকি মোকাবিলায় মার্কিন কৌশল বাস্তবায়নেও রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
জর্ডানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সিরিয়া সীমান্তের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ঘাঁটিতে রোববার (২৮ জানুয়ারি) ড্রোন হামলা হয়। এতে তিন মার্কিন সেনা নিহত হন, আহত হন বেশ কয়েকজন। জর্ডান সরকারের এক মুখপাত্রের বরাতে আন্তর্জাতিক গণামাধ্যম জানায়, হামলাটি ঘটেছে ‘টাওয়ার ২২’ নামে পরিচিত মার্কিন একটি সামরিক ঘাঁটিতে। কাগজে-কলমে সেনাঘাঁটি হিসেবে উল্লেখ থাকলেও এর বিস্তারিত কোনো তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হয়নি।
‘টাওয়ার ২২’ এর অবস্থান জর্ডানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শেষ প্রান্তে ইরাক ও সিরিয়ার সীমান্তে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এখানে মার্কিন সেনা ও বিমান বাহিনীর অন্তত সাড়ে ৩শ’ সেনা আছে। ঘাঁটিটিতে নিয়মিত সামরিক রসদ পৌঁছে দেয়া হয়।
টাওয়ার ২২-এর কাছেই জর্ডান সীমান্তের অপর পাশে সিরিয়ায় আল তানফ অবস্থিত। সেখানেও মোতায়েন আছে মার্কিন সেনা। জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস’র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তানফ দীর্ঘদিন ধরে প্রধান ভূমিকা পালন করে আসছে। এটি সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হুমকি মোকাবিলায় মার্কিন কৌশল বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
তানফে থাকা মার্কিন সেনাদের যেকোনো প্রয়োজনে টাওয়ার ২২ থেকে সহায়তা দেয়া হয়। এ থেকেই হামলার শিকার হওয়া ঘাঁটিটির গুরুত্ব সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়।
যুক্তরাষ্ট্র বিদেশি সামরিক বাহিনীগুলোকে যে সহায়তা দেয়, তার একটি বড় অংশ পায় জর্ডানের সেনাবাহিনী। জর্ডানে বর্তমানে কয়েকশ মার্কিন সামরিক প্রশিক্ষক আছেন। মধ্যপ্রাচ্যের যে গুটিকয়েক মিত্র দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র বছরজুড়ে সামরিক মহড়া চালায় জর্ডান তাদের মধ্যে অন্যতম।
২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর পর মার্কিন প্রশাসন জর্ডানে বড় আকারে নজরদারি পদ্ধতি গড়ে তোলার নীলনকশা করে। ব্যয় করে কোটি কোটি ডলার। সিরিয়া ও ইরাক থেকে জঙ্গিদের জর্ডানে অনুপ্রবেশ রোধে গড়ে তোলা এই পদ্ধতিকে বিশ্বের কাছে ‘বর্ডার সিকিউরিটি প্রোগ্রাম’ নামে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়।