ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ছয়টি প্রকল্পে চীনের কাছে নতুন করে আরও এক বিলিয়ন ডলার চায় বাংলাদেশ। এছাড়াও বাংলাদেশের আইসিটি ও টেলিকম খাতে যাতে চীন সরকার ও কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ বাড়ে, তা নিশ্চিত করতে চীন-বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলনেরও আয়োজন করা হবে।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তিনি বলেন, গত ১০ বছরে আমরা লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে মোট পাঁচটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি। আমরা এখন ১ লাখ ৯ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ভূমি অফিস, কমিউনিটি হেলথ ক্লিনিক, প্রাইমারি স্কুল, হাই স্কুল ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবলের আওতায় সংযুক্ত করছি। তাছাড়া ৫৫৫টি স্মার্ট এমপ্লয়মেন্ট ট্রেনিং সেন্টার করছি। পাশাপাশি পূর্বাচলে একটি ৪১ তলা স্মার্ট টাওয়ার করছি। এসবগুলোই ইডিসি (চীনের ঋণ) প্রজেক্টের আওতায় হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) যে মডানাইজেশন অব টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক, টেলিটকের ফোরজি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং এস্টাবলিশমেন্ট অব ডেটা সেন্টার রয়েছে, এগুলো ৬ প্রজেক্টের আওতায় গত ১০ বছরে এক বিলিয়ন ডলার আমরা চাইনিজ লাইন অব ক্রেডিট থেকে ব্যবহার করেছি। সেখান থেকে আয় করে আমরা এখন ঋণ ফেরতও দিচ্ছি।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভিশন-২০৪১ হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। সেই স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি পিলার- স্মার্ট সিটিজেন, ইকোনমি, গভার্নমেন্ট এবং সোসাইটি; সেখানে আমরা চাইনিজ সরকার, চাইনিজ এক্সিম ব্যাংক এবং চাইনিজ বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানির বিনিয়োগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করছি।
সেখানে ৬টি প্রজেক্ট ইআরডির মাধ্যমে চাইনিজ সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মডানাইজেশন অব আরবান অ্যান্ড রুরাল লাইফ হচ্ছে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প। তাছাড়া টেলিটকের ফোরজি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ প্রকল্প ও আমাদের বিটিসিএল টেলিফোন শিল্প সংস্থা এবং কম্পিউটার কাউন্সিলের আরও প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের লাইন অব ক্রেডিট চেয়ে ছয়টি প্রজেক্ট আমরা জমা দিয়েছি।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য রাজনৈতিক কূটনীতি না, বরং অর্থনৈতিক কূটনীতি। আমরা চাচ্ছি, চীন-বাংলাদেশের বন্ধুত্বের যে ৫০ বছর, তা ২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে চাইনিজ সরকার এবং চাইনিজ কোম্পানিগুলো যাতে আইসিটি এবং টেলিকমকে তাদের বিনিয়োগের একটি সর্বোত্তম জায়গায় হিসেবে চিহ্নিত করে। এজন্য আমরা বাংলাদেশ-চায়না ইনভেস্টমেন্ট সামিট করব। সেটির ব্যাপারেও কথা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একটি স্মার্ট ইকোনোমি এবং ইনভেস্টমেন্ট পার্টনারশিপ স্ট্রাটেজিক এমওইউ করব। সেখানে আমাদের চারটি লক্ষ্য আছে- রফতানি আয় বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং গবেষণা ও উদ্ভাবন। এই চারটি অঞ্চলে বাংলাদেশ ও চীন একসঙ্গে কাজ করবে।’
আগামী পাঁচ বছরে সরকারি বিনিয়োগ পাওয়ার আশাবাদ জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন,
সেই ক্ষেত্রগুলো আমরা চিহ্নিত করেছি। রাষ্ট্রদূত আমাকে কথা দিয়েছেন তিনি তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণেআগামী পাঁচ বছর আমাদের পাশে থাকবেন। যাতে ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশের একটি শক্ত ভিত্তি এই পাঁচ বছরে আমরা তৈরি করতে পারি।