ভরা মৌসুমেও অস্থির শীতকালীন সবজির বাজার। স্বস্তি ফিরছে না কোনোকিছুতেই। দুদিনের ব্যবধানে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে ১২০ টাকায় ঠেকেছে বেগুনের দাম। তা ছাড়া সব ধরনের সবজিসহ উচ্চমূল্যের ঘরেই আছে চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজসহ অধিকাংশ পণ্যের দাম। মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় আছে গরুর মাংস ও ব্রয়লার মুরগি।
শীতের শুরুর দিকে যে বেগুন বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। এখন সেটি ঠেকেছে ১২০ টাকায়। শুধু বেগুন নয়, ঠান্ডা আর ঘন কুয়াশার কারণ দেখিয়ে বাড়ানো হয়েছে সব ধরনের সবজির দাম। রাজধানী বাজারগুলোয় প্রতিকেজি আলু ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, পুরান আলু ৭০ টাকা, টমেটো ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা (পিস), বাঁধাকপি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, লাউ ১০০ থেকে ১২০ টাকা (পিস), পেঁপে ৬০ টাকা ও ব্রকলি ৫০ টাকা।
সবজির পাশাপাশি বাজারের অধিকাংশ পণ্যের লাগামহীন দামে দিশেহারা ক্রেতা। বর্তমানে প্রতি কেজি মসুর ডাল ১৪০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ২০০ টাকা এবং গরুর মাংস ৭০০ টাকা। এক ক্রেতা বলেন, যেটাই ধরি সেটির দামই আগুনের মতো। মধ্যবিত্ত দূরে থাক, নিম্নবিত্তের তো কেনার প্রশ্নই আসে না।
আরেকজন ক্রেতা বলেন, যারা মধ্যবিত্ত তাদের জন্য পণ্য কেনা খুবই কষ্টকর। কারণ, কোনো কিছুর দামই কম না। প্রতিদিনই দাম বাড়ছে। সরকার আজ বলে দাম কমবে। পরদিন থেকেই দাম চড়ে যায়।
চড়া দামে যখন নাজেহাল ক্রেতা, তখন শীত আর কুয়াশার অজুহাত ব্যবসায়ীদের। যদিও অস্থির এই সময়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে খুচরা বিক্রেতাদেরও। এক বিক্রেতা বলেন, দাম বেশি হওয়ার কারণ হচ্ছে কুয়াশার জন্য ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এর জন্য দাম বাড়ছে।
এদিকে রমজানের দুই মাস আগেই আরও অস্থির হয়ে উঠছে নিত্যপণ্যের বাজার। চোখ রাঙাচ্ছে রোজায় চাহিদার শীর্ষে থাকা পণ্যগুলো। এ অবস্থায় দাম সহনীয় রাখতে নিয়মিত বাজার তদারকি করছে সরকারের দফতরগুলো।
এরই অংশ হিসেবে শনিবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে মিরপুর শাহ আলী বাজারে চালের আড়তে অভিযান চালায় খাদ্য মন্ত্রণালয়। এসময় নানা অসঙ্গতি পায় তারা। অভিযানকালে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মর্জিনা আক্তার বলেন, সবাই দেখছেন যে বাজারে দামের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। বাজারে কোনো ঘাটতি নেই। তবুও অস্থিরতা তৈরি চেষ্টা চলছে।
তবে দাম বৃদ্ধির জন্য বড় কোম্পানি ও মিলারদের দুষছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। এক ব্যবসায়ী বলেন, উৎপাদকরা বলছেন যে সরবরাহ কম। তাই দাম বেশি। এখন আমরা কী করব। আমরা বেশি দামে কিনে আনি। আমরা কম দামে কিনতে পারি না। তাই বেশি দামে বিক্রি করি। আমরা যদি কম দামে কিনতে পারি তাহলে তো কম দামে বিক্রি করব।
খাদ্যদ্রব্যের দামবৃদ্ধির জন্য যারাই দায়ী, কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানান খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।