ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে ফের ‘বৈশ্বিক সন্ত্রাসী’ হিসেবে ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
লোহিত সাগরে জাহাজ লক্ষ্য করে গোষ্ঠীটির হামলার জবাবে গত কয়েকদিন ধরে ইয়েমেনে দফায় দফায় বিমান হামলার পর বুধবার (১৭ জানুয়ারি) গোষ্ঠীটিকে ‘বিশেষভাবে চিহ্ণিত বৈশ্বিক সন্ত্রাসী’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে ওয়াশিংটন।
তবে এর জবাবে হুতিরা বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের সন্ত্রাসী বললেও ইসরাইলের সঙ্গে সম্পৃক্ত জাহাজগুলোকে লক্ষ্য করে তাদের যে হামলা চলছে গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে।
এরপর গত দুই মাস ধরে তারা লোহিত সাগরে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। ফলে জাহাজগুলো নিজেদের রুট পরিবর্তন করে দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল পথ বেচে নিতে বাধ্য হচ্ছে।
হুতিদের এই হামলা বন্ধে লোহিত সাগরে একটি সামরিক জোট গঠন করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর চলতি মাসের শুরু থেকে লোহিত সাগর ও ইয়েমেনে হুতিদের অবস্থান লক্ষ্য করে দফায় দফায় বিমান হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন হতাহত ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
কিন্তু তাতেও দমেনি হুতিরা। বরং হামলা আরও জোরদার করেছে। চলতি সপ্তাহে প্রায় প্রতিদিনই হামলা চালিয়েছে হুতিরা।
এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে বুধবার (১৭ জানুয়ারি) হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ক্রমাগত হুমকি ও হামলার জবাবে যুক্তরাষ্ট্র হুতিদের ‘বিশেষভাবে চিহ্ণিত বৈশ্বিক সন্ত্রাসী’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘হুতিদের সন্ত্রাসী অর্থায়ন বাধাগ্রস্ত করতে, আর্থিক বাজারে তাদের প্রবেশাধিকারকে আরও সীমাবদ্ধ করতে এবং তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য তাদের জবাবদিহি করার জন্য এই তকমা একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার।’
সুলিভান আরও বলেন, ‘৩০ দিনের জন্য এই তালিকাকরণ কার্যকর হবে না। হুতিরা যদি লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে হামলা বন্ধ করে দেয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তাৎক্ষণিকভাবে এই সন্ত্রাসী তকমা পুনর্বিবেচনা করবে।’
বিবিসি জানায়, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এই পদক্ষেপ অনুমোদন করার সিদ্ধান্ত নেন। এর আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে হুতিদের তহবিল জব্দ হবে এবং এই গোষ্ঠীর সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রের যাওয়া নিষিদ্ধ হবে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতা ছাড়ার শেষ মুহূর্তে হুতিদেরকে ‘বৈশ্বিক সন্ত্রাসী’ গোষ্ঠী (এসডিজিটি) এবং ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ (এফটিও) তকমা দিয়ে গিয়েছিল।
এরপর ২০২১ সালে জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর গোষ্ঠীটির সন্ত্রাসী তকমা তুলে নেয়া হয়। তখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘আগের প্রশাসন শেষ মুহূর্তে হুতিদের সন্ত্রাসী তকমা দেয়ায় যে সংকট তৈরি হয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে সম্পূর্ণ মানবিক বিবেচনায় তা তুলে নেয়া হলো।’