আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সংসদে বিরোধী দল কারা হবে ৩০ তারিখ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ অধিবেশনেই তা দেখা যাবে।
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) ধানমন্ডিতে সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে বলার সময় এ কথা জানান তিনি।
নির্বাচনের পর দলের ভেতরে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে-এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন,
নির্বাচনকে সমানে নিয়ে আমাদের একটা কৌশল ছিল, এটা আমি আগেও বলেছি। রাজনীতিতে রণকৌশল থাকবেই। আমরা একটা রণকৌশল অবলম্বন করেছিলাম। আমাদের দলের ভেতরে দ্বন্দ্ব,সমস্যা ও কলহ হচ্ছে; এটা আওয়ামী লীগে নতুন না। সব রাজনৈতিক দলেরই এইসব দিক থেকে সুখকর নয়। এখানে দ্বন্ধ থাকবে, একের অপরের সাথে কলহ থাকবে। এটার সমাধানও আবার দলই করে থাকে। তাই সংসদে বিরোধী দল কারা হবে, ৩০ তারিখ দ্বাদশ সংসদ অধিবেশনেই তা দেখা যাবে।
এ সংবাদ সম্মেলনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) প্রতিবেদনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তারা একটি পক্ষের ওকালতি করে, বিএনপি যে ভাষায় কথা বলে, তারাও একই কথা বলে।
তিনি আরও বলেন, একটা প্রতিষ্ঠান আছে যাদের কোনো রেজিস্ট্রেশন নেই, কোনো রেজিস্ট্রেশন নেই। অথচ কিছু কিছু গণমাধ্যমে আছে তাদের কথা ফলোও করে প্রচার করে। এখন ধরুন অ্যাকসিডেন্টে যদি ১০০ লোক মারা যায়, তারা এটাকে ৫০০ বানাবে। টিআইবিও এ রকম একটা প্রতিষ্ঠান। তারা গবেষণা করে, কিন্তু তাদের গবেষণার বাস্তবতা আমরা খুঁজে পাই না।
তাহলে টিআইবির বিরুদ্ধে আইনি কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন,
এই তাদের নিয়ে কথা বলছি এইটাই তো যথেষ্ট, তারা একপেশে পক্ষপাতিত্ব করে, সেটা বলছি। সব ব্যাপারেই কী মামলা ঠুঁকে দিতে হবে। টিআইবি সরকারের বা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করলেও সংস্থাটির বিরুদ্ধে মামলা করবে না আওয়ামী লীগ।
একটা সময় এই টিআইবি বলেছিল, পদ্মা সেতু তৈরি করা অসম্ভব- এমন কথা মনে করিয়ে দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন,
সাংবাদিকরা আপনাদের নিশ্চয় খেয়াল আছে। আবার সিপিডিও একই কথা বলেছিল। কিছু কিছু বিষয় আছে, আমরা জবাব দিয়ে থাকি রাজনৈতিকভাবে। জবাব দেয়া হয় কারণ, এটা হলো দেশের মানুষের উপলব্ধিটা যেন ভিন্নখাতে না যায়। সেজন্য আমাদের কথা বলতে হয়। মামলা করে সব সময় সমস্যার সমাধান হয় না। রাজনৈতিকভাবেও মোকাবিলা করতে হয়। এই ধরুন, বিএনপি নেতা রুহুল কবির
রিজভী প্রতিদিন কত কথাই না বলেন। এগুলো নিয়ে তো মামলা করলে চলে না। রাজনৈতিকোবে কথা বলি ও মোকাবিলা করি।
প্রসঙ্গত: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একপক্ষীয় ও পাতানো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়েছে বলে মনে করে টিআইবি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি বলেছে, এবারের নির্বাচন অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়নি। এ নির্বাচন দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ভবিষ্যতের জন্য অশনিসংকেত। টিআইবির কার্যালয়ে ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়া ট্র্যাকিং’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়। এতে নির্বাচন নিয়ে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। টিআইবির পক্ষ থেকে বলা হয়, ভোট প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক দেখাতে নিজ দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়া হলেও বেশির ভাগ আসনে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়নি। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ছিল না ২৪১টি আসনের ভোট। টিআইবি আরও বলেছে, নির্বাচনে শেষের এক ঘণ্টায় ১৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ ভোটসহ মোট ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পড়া বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
নির্বাচনের ভোটগ্রহণের পরের দিন ৮ জানুয়ারি রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারাদেশে মোট ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।