দীর্ঘ এক যুগ স্মার্টফোনের বাজারে নিজেদের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছিল স্যামসাং। কিন্তু এবার দক্ষিণ কোরীয় কোম্পানিটিকে হটিয়ে শীর্ষস্থান দখল করেছে অ্যাপল। ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি স্মার্টফোন বাজারজাত করেছে আইফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি।
ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্যামসাং ইলেকট্রনিকসের বিভিন্ন ডিভাইসকে পেছনে ফেলে গত বছর সর্বাধিক বিক্রিত স্মার্টফোন ছিল আইফোন। ফলে ২০১০ সালের পর প্রথমবার শীর্ষস্থান থেকে ছিটকে পড়ল দক্ষিণ কোরিয়ার বৃহত্তম কোম্পানিটি।
বাজার গবেষণা সংস্থা আইডিসি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর বৈশ্বিক স্মার্টফোনের বাজারের পঞ্চমাংশজুড়েই ছিল আইফোনের আধিপত্য। কারণ ২০২৩ সালে প্রায় ২৩৫ মিলিয়ন আইফোন বাজারজাত হয়েছে। যেখানে দ্বিতীয় স্থানে নেমে আসা স্যামসাংয়ের বিভিন্ন ডিভাইসের বিক্রি দুই ডিজিট অঙ্কে কমে নেমেছে ২২৬ দশমিক ৬ মিলিয়নে। তবে এটি শাওমি করপোরেশনের মতো চীনা ডিভাইস নির্মাতাদের থেকে অনেকটা এগিয়ে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোর ছুটির মৌসুমগুলোয় বাজারে আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে অ্যাপল। তাছাড়া ২০২৩ সালের পুরোটা জুড়েই স্যামসাং থেকে অভূতপূর্বভাবে এগিয়ে ছিল কোম্পানিটি। যা শিল্পখাতে চলমান মন্দাবস্থায় বাজার প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় অ্যাপলের ভালো অবস্থান ধরে রাখার দিকেই ইঙ্গিত দেয়।
অ্যাপলের বিক্রি বাড়ার ক্ষেত্রে বড় অবদান রেখেছে কোম্পানিটির দেয়া বিপুল আকারের বিভিন্ন অফার। যেখানে কোম্পানিটির বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বাজার চীনে আইফোন ১৫ বাজারজাতে শত বাধার পরও গত বছর বিক্রি বেড়েছে। কেননা, চীনের বাজারে ক্রমবর্ধমানভাবে বাড়ছে হুয়াওয়ে টেকনলোজিসের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। পাশাপাশি সরকারি ক্ষেত্রে আইফোন ব্যবহারের ওপর বিধিনিষেধ রয়েছে।
এ বিষয়ে আইডিসির গবেষণা পরিচালক নাবিলা পপাল বলেন,
যদিও ২০২৩ সালের দ্বিতীয়ার্ধে ট্রান্সশন এবং শাওমির মতো লো-অ্যান্ড অ্যান্ড্রয়েড ব্র্যান্ডগুলোর স্মার্টফোন বিক্রি ব্যাপক আকারে বেড়েছে, তবে দিনশেষে বিজয়ী যে অ্যাপল, তা বেশ স্পষ্ট। অ্যাপলের এ সাফল্যের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা ছিল প্রিমিয়াম ডিভাইসগুলোর চাহিদা বেড়ে যাওয়া। যা এখন মোট বাজারের ২০ শতাংশেরও বেশি প্রতিনিধিত্ব করে।
এদিকে চলতি সপ্তাহে চীনের প্রতিযোগিতামূলক বাজার ধরে রাখতে আইফোনের ওপর বিরল মূল্যছাড়ের উদ্যোগ নিয়েছে অ্যাপল। হ্যান্ডসেট প্রতি ৫ শতাংশ মূল্যছাড়ের পরিকল্পনা রয়েছে কোম্পানিটির।