অবরুদ্ধ গাজায় ত্রাণ সরবরাহ আরও বাড়ানোর বিনিময়ে ইসরাইলি জিম্মিদের সুরক্ষা ও সুস্থতা নিশ্চিত করবে হামাস। এ নিয়ে কাতার ও ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) দুপক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি সই হয়েছে।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কাতার এবং ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় মঙ্গলবার দুপক্ষের প্রতিনিধিদের মধ্যে সই হওয়া চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, নিজেদের হাতে আটক জঙ্গিদের শারীরিক ও স্বাস্থ্যগত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করবে হামাস। এর বিনিময়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় আরও বেশি ত্রাণ সামগ্রী ঢুকতে দেবে ইসরাইলি বাহিনী।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি এক বিবৃতিতে বলেন,
এ চুক্তি অনুযায়ী গাজায় বন্দি ইসরাইলি জিম্মিদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও সুরক্ষা দেবে হামাস। আর গাজার সবচেয়ে বিধ্বস্ত এলাকায় মানবিক সহায়তার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ওষুধ বেসামরিকদের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে।
যুক্তরাষ্ট্র এ চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে। মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মুখপাত্র জন কিরবি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা। আমরা আশা করছি, এ সমঝোতা আরও বেশি জিম্মির মুক্তির পথ প্রশস্ত করবে।’
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, গাজার ফিলিস্তিনিদের জন্য ত্রাণসামগ্রী এবং হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের জন্য ওষুধের প্রথম চালানটি বুধবার কাতারের রাজধানী দোহা থেকে মিশরের উদ্দেশে পাঠানো হবে। তারপর সেখান থেকে ত্রাণ ও জিম্মিদের জন্য ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস যাবে গাজায়।
গেল বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। এতে ইসরাইলের ১২০০ মানুষ নিহত হয় বলে দাবি করেছেন কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও সেদিন দেশটির ২৪০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা। যদিও কাতারের মধ্যস্থতায় সামরিক যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে শতাধিক বন্দিকে মুক্তি দেয় হামাস। কিন্তু এখনো গাজায় শতাধিক জিম্মি রয়েছেন। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে ইসরাইলি হামলায় বহু জিম্মি নিহত হয়েছেন বলে জানায় হামাস।
এদিকে, হামাসের হামলার প্রতিবাদে গাজায় তিনমাসেরও বেশি সময় ধরে বর্বর হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। এতে এখন পর্যন্ত ২৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৬০ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছেন।