সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বের শীর্ষ ৫ ধনী হয়েছেন আরও ধনী। ২০২০ সাল থেকে তাদের সম্পদ ফুলেফেঁপে বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। আর ধারাবাহিকভাবে যদি এমন হারে তাদের সম্পদ বাড়তে থাকে, তাহলে শিগগিরই পৃথিবীবাসী দেখতে যাচ্ছে বিশ্বের প্রথম ট্রিলিয়নিয়ার।
রোববার (১৪ জানুয়ারি) প্রকাশিত অক্সফামের বার্ষিক বৈষম্য প্রতিবেদনের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে সিএনএন।
এতে বলা হয়, মূল্যস্ফীতির হিসাব বিবেচনায় নিয়েই ২০২০ সাল থেকে বিশ্বের শীর্ষ ৫ বিলিয়নিয়ারের মোট সম্পদ ১১৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৬৯ বিলিয়ন ডলার। এমন গতিতে যদি তাদের সম্পদ বাড়তে থাকে, তাহলে বিশ্ব এক দশকের মধ্যেই প্রথম ট্রিলিয়নিয়ার দেখতে পাবে।
গত ৪ বছরে এ ৫ ধনকুবেরের সম্পদ প্রতি ঘণ্টায় ১৪ মিলিয়ন ডলার হারে বেড়েছে বলে জানিয়েছে অক্সফাম। এ ধনকুবেররা হলেন: ফরাসি বিলাসী পণ্যের কোম্পানি এলভিএমএইচের প্রধান বার্নার্ড আর্নল্ট, অ্যামাজনের জেফ বেজোস, বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেট, ওরাকলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন এবং টেসলার সিইও ইলন মাস্ক।
এ সময়ে সম্পদশালী হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন বিলিয়নিয়ার ইলন মাস্ক। তিনি টেসলা ও স্পেসএক্সসহ বেশ কয়েকটি সংস্থা চালান। গত বছরের নভেম্বরের শেষ নাগাদ তার সম্পদ বেড়ে দাঁড়ায় ২৪৫.৫ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২০ সালের মার্চের তুলনায় ৭৩৭ শতাংশ বেশি।
এরপরই রয়েছেন ফরাসি বিলাসী পণ্যের জায়ান্ট এলভিএমএইচের চেয়ারম্যান বার্নার্ড আর্নল্ট। একই সময়ে তার সম্পদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯১.৩ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২০ সালের মার্চের তুলনায় ১১১ শতাংশ বেশি।
একই সময়ে অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের সম্পদ বেড়ে ঠেকেছে ১৬৭.৪ বিলিয়ন ডলারে, যা বেড়েছে ২৪ শতাংশ। অন্যদিকে এ সময় ওরাকলের প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসনের মোট সম্পদ দাঁড়িয়েছে ১৪৫.৫ বিলিয়ন ডলার, যা বেড়ছে ১০৭ শতাংশ। আর বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের সিইও ওয়ারেন বাফেটের সম্পদ এ সম,য়ে ৪৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৯.২ বিলিয়ন ডলারে।
সামগ্রিকভাবে বিশ্বের বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ ২০২০ সাল থেকে ৩.৩ ট্রিলিয়ন বা ৩৪ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছে অক্সফাম। তাদের সম্পদ মূল্যস্ফীতির হারের চেয়েও তিন গুণ হারে ফুলেফেঁপে ওঠেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। তাছাড়া মার্কিন বিলিয়নিয়াররা তাদের সম্পদের পাহাড়ে আরও ১.৬ ট্রিলিয়ন ডলার যোগ করেছে।
ধনীদের সম্পদের পাহাড় বড় হলেও একই সময়ে মূল্যস্ফীতি, যুদ্ধ এবং জলবায়ু সংকটের সঙ্গে নিত্যদিন লড়াই করে বিশ্বের প্রায় ৫ বিলিয়ন মানুষ আরও দরিদ্র হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্বে দারিদ্র্য দূর করতে ২৩০ বছরের মতো সময় লাগবে।
অক্সফাম আমেরিকার ইকোনমিক অ্যান্ড রেসিয়াল জাস্টিসের ডিরেক্টর নাবিল আহমেদ বলেছেন,
যদিও বৈষম্য বাড়ছে, তবে কিছু কিছু ভালো জিনিসও হয়েছে। শ্রমিকরা ধর্মঘট ও নানা চুক্তির মাধ্যমে নিজেদের অধিকার আদায় করে নিচ্ছেন। এছাড়া কিছু দেশের সরকার শ্রমিকের পক্ষে সমর্থন দিচ্ছে। তারা শ্রমিকদের অধিকারকে শক্তিশীল করার লক্ষ্যে বিভিন্ন নীতি তৈরি করছে।