দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৯টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২২৪টি আসন। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন উঠে এসেছেন ক্রীড়াঙ্গন থেকে। আবার কেউ ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। এক নজরে তাদের দেখে নেওয়া যাক।
১. সাকিব আল হাসান
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবচেয়ে বড় চমক নিয়ে হাজির হয়েছিলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। খেলার মাঠ থেকে উঠে আসা এই তারকা সফল হয়েছেন রাজনীতির মাঠেও। জাতীয় দলের এই অধিনায়ক মাগুরা-১ আসন থেকে জয়ী হয়েছেন। আসনের ১৫২ কেন্দ্রে নৌকা প্রতীক নিয়ে ১ লক্ষ ৮৫ হাজার ৩৮৮ ভোট পেয়েছেন তিনি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ কংগ্রেসের ডাব প্রতীকের কাজী রেজাউল ইসলাম পেয়েছেন ৫ হাজার ৯৯৩ ভোট।
২. মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা
খেলার মাঠের মতো রাজনীতিতেও একের পর এক সাফল্য বয়ে আনছেন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। টানা দ্বিতীয়বারের মতো নড়াইল-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেন জাতীয় দলের সাবেক এই ক্রিকেটার। স্থানীয় সূত্র মতে, ১৪৭ কেন্দ্রে ১ লাখ ৮৯ হাজার ১০২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন মাশরাফী। মাশরাফীর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন হাতুড়ি মার্কার শেখ হাফিজুর রহমান। তিনি ভোট পেয়েছেন ৪ হাজার ৪১টি। এ ছাড়াও ঈগল মার্কার প্রার্থী মোহাম্মদ নূর ইসলাম পেয়েছেন ১ হাজার ৩৬৩ ভোট।
৩. নাজমুল হাসান পাপন
এই নিয়ে চতুর্থবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। কিশোরগঞ্জ-৬ আসন থেকে ১৪২টি কেন্দ্রের মধ্যে ভোটগণনা শেষে বিজয়ী হয়েছেন পাপন। ১৪২ কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে তিনি ভোট পেয়েছেন ১ লাখ ৯৮ হাজার ১৫৫টি। পাপনের নিকটতম প্রার্থী জাতীয় পার্টি থেকে নূরুল কাদের সোহেল পেয়েছেন ৩ হাজার ৫৫টি ভোট।
৪. আ হ ম মোস্তফা কামাল
বিসিবির আরেক সাবেক সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামাল এবার কুমিল্লা-১০ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। শেখ হাসিনার চতুর্থ মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ১৯৯৬ সালে প্রথমবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হন মুস্তফা কামাল। এরপর ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে নির্বাচিত হন তিনি। এবার পঞ্চম ও টানা চতুর্থবারের মতো নির্বাচিত হলেন তিনি। আ হ ম মোস্তফা কামাল ১৮৭ কেন্দ্র থেকে ২ লাখ ৩২ হাজার ৬৯৯ ভোট পেয়ে বড় ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন। এই আসনে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মিসেস জোনাকী হুমায়ুন পেয়েছেন মাত্র ৮ হাজার ৫৪৮ ভোট।
৫. আব্দুস সালাম মুর্শেদী
ফুটবল ফেডারেশনের শীর্ষ কর্তা আব্দুস সালাম মুর্শেদী খুলনা-৪ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এই নিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হলেন তিনি। ১৩৩ কেন্দ্র থেকে ৮৬ হাজার ১৯৪টি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন তিনি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ছিলেন কেটলি মার্কা নিয়ে লড়াই করা স্বতন্ত্র প্রার্থী এস. এম. মোর্ত্তজা রশিদী দারা। তিনি পেয়েছেন ৬০ হাজার ৮৯৩ ভোট।
৬. জাহিদ আহসান রাসেল
গাজীপুর-২ আসনের নৌকার প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। ২৭২ কেন্দ্র থেকে তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৩ হাজার ৯৮৬ ভোট। এই আসন থেকে ট্রাক মার্কায় স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী আলিম উদ্দিন পেয়েছেন ৮১ হাজার ৮০৪ ভোট।
৭. কাজী নাবিল আহমেদ
বাফুফের কর্মকর্তা কাজী নাবিল আহমেদ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে যশোর-৩ আসন থেকে জয়ী হয়েছেন। ১৮৯ কেন্দ্র থেকে তিনি ১ লাখ ২১ হাজার ৭২০ ভোট পেয়েছেন। এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহিত কুমার নাথ পেয়েছেন ৬৪ হাজার ৫৫১ ভোট। আর জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. মাহবুব আলম পেয়েছেন ৩ হাজার ৭১০ ভোট।
৮. শফিউল আলম চৌধুরি নাদেল
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক হিসেবে লম্বা সময় ধরে কাজ করছেন শফিউল আলম চৌধুরি নাদেল। এছাড়া তিনি নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান। এবার মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে নৌকার প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। ১০৩ কেন্দ্র থেকে তিনি ৭২ হাজার ৭১৮ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এ.কে.এম সফি আহমদ সলমান ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ১৫ হাজার ৫৫২ ভোট।
৯. সাবের হোসেন চৌধুরী
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৯ আসনে নৌকার প্রার্থীর বিজয়ে কোনো বাধা হতে পারেনি জাতীয় পার্টির লাঙ্গল। বলা যায়, অনেকটা প্রতিদ্বন্দ্বী ছাড়াই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাবেক সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী জয়ী হয়েছেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১,২,৩,৪,৫,৬,৭,৭১,৭২,৭৩,৭৪ ও ৭৫ ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ঢাকা-৯। এই আসনে নৌকা নিয়ে ভোটের মাঠে ছিলেন সাবের হোসেন চৌধুরী। ১৬৯ কেন্দ্রের সব ফলাফল গণনা শেষে দেখা যায়, ৯০ হাজার ৩৯৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন তিনি। আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির লাঙ্গলের কাজী আবুল খায়ের পেয়েছেন মাত্র ২ হাজার ৭৯৪ ভোট।