দীর্ঘ ৩০ বছর পর কর ফাঁকির মামলা থেকে মুক্তি পেলেন ফুটবল কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনা। শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) ইতালির সর্বোচ্চ আদালত তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
২০২০ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন ফুটবল ঈশ্বর ম্যারাডোনা। তার মৃত্যুর তিন বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু এ সময়ের মধ্যেও কর ফাঁকির মামলার জন্য লড়তে হয়েছে তার আইনজীবীকে। সবমিলিয়ে মামলার সময়কাল ছিল ৩০ বছর। কিন্তু যার সমাপ্তি দেখে যেতে পারলেন না আর্জেন্টিনার হয়ে ১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপ জেতা তারকা।
ঘটনার শুরু ৯০ দশকের শুরুতে। বার্সেলোনা ছেড়ে ১৯৮৪ সালে ইতালির ক্লাব নাপোলিতে যোগ দেন ম্যারাডোনা। কখনো লিগ শিরোপা না জেতা দলকে ১৯৮৬-৮৭ ও ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে চ্যাম্পিয়নের স্বাদ পাইয়ে দেন তিনি। জেতান ১৯৮৮-৮৯ সালের উয়েফা কাপও। তার কল্যাণে ফুটবল প্রেমে মেতে ওঠে নেপলসের জনগণ। নেপলস বাসীর ভালোবাসা নিয়ে ১৯৯১ সালে ক্লাব ছাড়েন তিন। যদিও এখন পর্যন্ত সেখানকার মানুষরা তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে।
কিন্তু ক্লাব ছাড়ার আগে ম্যারাডোনার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে কর ফাঁকির। অভিযোগ ছিল, তিনি লিখটেনস্টাইনের প্রক্সি কোম্পানি ব্যবহার করে ১৯৮৫ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত নাপোলি থেকে পাওয়া ইমেজ স্বত্বের কর ফাঁকি দিয়েছিলেন। তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৭০ লাখ ইউরো কর ফাঁকির মামলা হয়। কিন্তু লম্বা সময়ের আইনি লড়াই শেষে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। তাতে তাকে মুক্তি দিয়েছে ইতালির সর্বোচ্চ আদালত।
কিংবদন্তির অব্যাহতি পাওয়া নিয়ে তার আইনজীবী অ্যাঞ্জেলো পিসানি বলেন, ‘এটা শেষ হলো। আমি স্পষ্টভাবে নির্ভয়ে বলতে পারি যে ম্যারাডোনা কখনোই কর ফাঁকি দেননি। চূড়ান্ত রায় ভক্ত, ফুটবলের মূল্যবোধ ও ম্যারাডোনার স্মৃতির প্রতি ন্যায়বিচার করেছে। ৩০ বছর ধরে যে নিপীড়ন তার ওপর চলছিল, তারও সমাপ্তি ঘটল। পাশাপাশি এখন তার উত্তরাধিকারীদের ক্ষতিপূরণ দাবি করার আইনগত অধিকার রয়েছে। আমি আশা করি, তারাই এ সুযোগ গ্রহণ করবে। তাদের বাবার স্মৃতির উদ্দেশে তারা এটি করবে।’