ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি।।
মোট মাছ উৎপাদনঃ
জেলার ৫২ হাজার ৪৫৩ দশমিক ৬২ হেক্টর জলাশয়ে মাছ উৎপাদন হয় ৭৬ হাজার ৮৮৪ দশমিক ৮২ মেট্রিকটন। এ জেলায় মাছের বার্ষিক মোট চাহিদা ৬১ হাজার ২১০ মেট্রিকটন। জেলার ৬২ লক্ষ ১৩ হাজার ৯৪০ জন মানুষের চাহিদা মিটিয়ে ১৫ হাজার ৬৭৪ দশমিক ৮২ মেট্রিকটন উদ্বৃত্ত মাছ দেশের অন্য জেলায় সরবরাহ করা হয়। নওগাঁ জেলায় মাছ উৎপাদনের যথেষ্ট ক্ষেত্র রয়েছে। বর্তমান সরকারের রুপালী সম্পদ মাছ চাষে জনগনকে অধিক আগ্রহী করে তোলা এবং মৎস্যজীবি ও মৎস্য চাষীদের নানা ভাবে নানাভাবে উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসুচির কারণে এ জেলায় মাছ চাষের এ সফলতা অর্জিত হয়েছে বলে জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. ফিরোজ আহমেদ।
প্লাবন ভুমিঃ নওগাঁ জেলায় মোট প্লাবন ভুমির সংখ্যা ৯৭ টি। এসব প্লাবন ভুমির জলাশয়ের মোট আয়তন ১৩ হাজার ৮৯২ দশমিক ৯১ হেক্টর। এসব প্লাবন ভুমিতে মোট মাছ উৎপাদন হয় ৫ হাজার ৯৬১ দশমিক ৯৮ মেট্রিকটন। বরোপিট এবং সড়ক রেল ও জনপদের জলাশয় রয়েছে ৩১টি। এ জলাশয়ের মোট আয়তন ৫৫ দশমিক ৫৪ হেক্টর। এসব জলাচয়ে মোট মাছ উৎপাদন হয় ১৪৫ মেট্রিকটন।
মৎস বীজ উৎপাদন খামারঃ
জেলা মৎস্য অফিসার আরো জানিয়েছেন, এ জেলায় সরকারি মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার রয়েছে ৩ টি। এসব খামারে বার্ষিক ১১৬ কেজি কার্পের রেনু এবং রুই জাতীয় মাছের পোনা উৎপাদন হয় ৩ দশমিক ০৬৬ লাখ। এ ছাড়াও নওগাঁ সদর খামারে ১ লাখ গলদা চিংড়ির লার্ভা উৎপাদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
নওগাঁ জেলায় দিঘীঃ
মৎস্য উৎপাদনকারি দিঘী সমুহের মধ্যে পত্নীতলার ঐতিহাসিক দিবরদিঘী, রানীনগরে আবাদ পুকুর দিঘী, নওগাঁ সদরে কনোক রাজার দিঘী, ধামইরহাটের ঐতিহাসিক আলতাদিঘী, টুক্কামারি দিঘী, দারকা দিঘীসহ অসংখ্যা দিঘী সমুহে বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তিতে প্রচুর পরিমানে মৎস্য চাষ হচ্ছে।
নওগাঁ জেলায় মোট পুকুরঃ
এ জেলায় মোট পুকুর রয়েছে ৪৭ হাজার ১০৪টি। এসব পুকুরের জলাশয়ের মোট আয়তন ১২ হাজার ৭৪৯ দশমিক ৮২ হেক্টর। এসব জলাশয়ে মাছ উৎপাদনের পরিমান ৫৭ হাজার ৭৩৭ দশমিক ৭৮ মেট্রিকটন।
উন্মুক্ত জলাশয় নদীঃ
উন্মুক্ত জলাশয়ের মধ্যে নদীর সংখ্যা মোট ৭টি। জার জলাশয়ের আয়তন মোট ১১ হাজার ২০১ হেক্টর। নদীর এসব জলাশয়ে মোট মাছ উৎপাদন হয় ৩ হাজার ৩৮০ দশমিক ৭৯ মেট্রিকটন।
নওগাঁ জেলায় বিল সমুহঃ
মৎস্য চাষের উপযোগী বিল গুলি অতি সম্ভাবনাময়। জেলার মোট বিলের সংখ্যা ১২৩টি। এসব বিলের মোট জলাশয়ের আয়তন ১৩ হাজার ৯৩৮ দশমিক ৩৫ হেক্টর। তন্মধ্যে নয়নাভিরাম ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা হাসাইগাড়ি বিল, গুটার বিল, মান্দার বিল, রানীনগররের রক্তদহবিল, পত্নীতলায় খুকশির বিল, ধামইরহাটের সাতবিলা, রসুল বিল অন্যতম। এ বিলের জলাশয়ের মোট মাছের উৎপাদন হয় ৯ হাজার ৫১৮ দশমিক ১৭ মেট্রিকটন। ৪০ টি খালও অন্যান্য জলাশয়ের মোট আয়তন ৩১৬ হেক্টর। এসব জলাশয়ে মোট মাছ উৎপাদিত হয় ১৪১ দশমিক ১২ মেট্রিকটন।
বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মৎস্য চাষঃ
ধামইরহাট থানার শংকরপুর গ্রামের মেহেদী হাসান বাইপক্স পদ্ধতিতে বাড়ির আঙ্গিনায় মাছের পোনা উৎপাদন করে আশাতিত লাভবান হয় এলাকার শিক্ষিত বেকার যুবকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছেন। এই গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন সামান্য অর্থ দিয়ে মৎস্য চাষ শুরু করে বর্তমানে ব্যাপক সফলতার মুখ দেখেন।
বায়োফ্লক পদ্ধতিঃ
মেহেদী হাসান স্থানীয় মৎস্য বিভাগের প্রশিক্ষন ও পরামর্শে বাড়ির আঙ্গিনায় চারিদিকে আড়াআড়ি ২৩ ফুট মাপের একটি ট্যাংক নির্মাণ করেন। গোড়া সহ পুরোটা মোটা পলেথিন পেপার দিয়ে আবৃত করে টাংকিতে পানি ভরে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিয়ে বেশ কয়েকটি লাইনে অক্সিজেন সরবরাহ করেন। প্রাথমিক ভাবে এখানে ৫০০ টাকা মুল্যের বিভিন্ন কার্প জাতীয় মাছের রেনু দিয়ে উৎপাদন শুরু করে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মৎস্য উৎপাদন শুরু করে বর্তমানে তিনি ব্যাপক সাফল্যের মুখ দেখেন।
গর্ভিত নওগাঁ জেলার কৃষি যোদ্ধারা কৃষিতে নতুন ইতিহাস গড়েন অন্য জেলার ইতিহাস ভাংগানোর জন্য। রোদ বৃষ্টি ঝড়ে অকুতোভয় বীর সেনানী নওগাঁর কৃষক ভাই তোমাদের শতকুটি ছালাম।