Homeঅর্থনীতিভীষণ ঝুঁকিতে ক্যাবল সেবাখাত!

ভীষণ ঝুঁকিতে ক্যাবল সেবাখাত!

দেশে এফটিপি (ফাইল ট্রান্সফার প্রোটোকল) সার্ভারের মাধ্যমে প্রচার হচ্ছে প্রাপ্তবয়স্কদের কনটেন্ট। বিদেশি বিজ্ঞাপনসহ চলছে পে-চ্যানেলও। সরকারি সিদ্ধান্তকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এসব সেবা দেয়ার অভিযোগ ওঠেছে ইন্টারনেট সেবাদাতাদের বিরুদ্ধে। এতে পুরো ক্যাবল সেবাখাতই এখন ভীষণ ঝুঁকিতে!

ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে ঢু মারলে চোখে পড়বে অনেক ধরনের এফটিপি সার্ভার। সেখানে ক্লিক করে লিংকে ঢুকলেই দেশি-বিদেশি সিনেমার পাইরেটেড ভার্সন উপভোগ করা যায়। সেই সঙ্গে রয়েছে অনুমোদিত সরাসরি টেলিভিশন দেখার ব্যবস্থাও।

অভিযোগ ওঠেছে, বিদেশি ডিটিএইচ (ডাইরেক্ট টু হোম) ও অন্যান্য সোর্স থেকে ডাউনলিংক করে বিনামূল্যে টিভি দেখাচ্ছে ওটিটি (ওভার দ্য টপ) ও ইন্টারনেট সেবাদাতারা। একই সঙ্গে সেখানে প্রচার হচ্ছে প্রাপ্তবয়স্কদের কনটেন্টও। পাশাাপাশি পে-চ্যানেলে চলছে বিদেশি বিজ্ঞাপন। এক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না ক্যাবল টিভি আইন কিংবা পে-চ্যানেলের ক্লিন ফিড প্রচারের সরকারি নির্দেশনা।

প্রসঙ্গত, ক্যাবল টিভি অ্যাক্ট-২০০৬-এ বলা হয়েছে, বাংলাদেশে যদি কোনো পে-চ্যানেল চলে, তা বৈধ ডিস্ট্রিবিউটরের মাধ্যমে ডাউনলিংক অনুমতি নিয়ে বিপণন ও প্রচার করা যাবে। এছাড়া তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে বিদেশি পে-চ্যানেলের ফিড বিজ্ঞাপনমুক্ত হতে হবে।

ক্যাবল অপারেটররা বলছেন, বৈধ ডিস্টিবিউটর থেকে পে-চ্যানেল কিনে সেবা দিতে গ্রাহকপ্রতি খরচ হয় প্রায় ১৬০ টাকা। তবে অভিযোগ ওঠেছে, গ্রাহকরা বিনামূল্যে সেবা পেলেও বিদেশি ডিটিএইচের ডাউনলিংক পারমিশন নিতে গোপনে অর্থ ব্যয় করছে আইএসপিগুলো (ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার)। অথচ তাতে রাজস্ব পাচ্ছে না সরকার।

এ বিষয়ে ক্যাবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) সভাপতি এ বি এম সাইফুল হোসেন বলেন,

পাইরেসি করে এবং বিভিন্ন মাধ্যম থেকে নিয়ে এ কনটেন্টগুলো বিনা পয়সায় গ্রাহকদের কাছে প্রচার করা হচ্ছে। ফলে আগে যেখানে আমাদের ১০০ জন সাবস্ক্রাইবার থাকতো, এখন সেটি ৩০ থেকে ৪০ জনে নেমে এসেছে।

এদিকে, ক্যাবল অপারেটরদের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ এনে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, ‘দু-চারজন অপারেটর হয় তো বেআইনি কাজ করছেন। সেটি আমরা সম্মিলিতভাবেই বন্ধ করব। কিন্তু ক্যাবল টিভি অপারেটর যারা আছেন, আমি তো জানি তাদের ৯০ শতাংশই ইন্টারনেট ব্যবসা করছেন। এটা তো সম্পূর্ণ অবৈধ।’

ইন্টারনেট সেবাদাতাদের এমন অনিয়মের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দিয়েছে ক্যাবল অপারেটর ও ডিটিএইচ সেবাদানকারী একটি প্রতিষ্ঠান। বিষয়টি আমলে নিয়ে পদক্ষেপও নিচ্ছে বিটিআরসি।

এ বিষয়ে বিটিআরসির কমিশনার শেখ রিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘অবৈধ অপারেটরদের আর্থিক জরিমানা করা হচ্ছে। তাছাড়া তাদের সব ধরনের সরঞ্জামাদি আমরা বায়েজাপ্ত করছি। এখন আমরা একটি নীতিমালা করতে যাচ্ছি, যাতে আইএসপি ব্যবসায়ীরা সুষ্ঠুভাবে এসব ভিডিও ডিস্ট্রিবিউশনের কাজ করতে পারেন।’

প্রসঙ্গত, বর্তমানে সারা দেশে ৫ হাজার ক্যাবল অপারেটর রয়েছে।

সর্বশেষ খবর