শূন্য থেকে কীভাবে খ্যাতির শিখরে নিজেকে তুলে ধরা যায় যদি তা শিখতে হয় তবে বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানের কাছ থেকেই শেখার আছে। কেননা দীর্ঘ ৪ বছরের বিরতির পর বলিউডে একের পর এক সিনেমা আর নতুনত্বের ধামাকা নিয়ে আসেন এই মেগাস্টার। যেকারণে ২০২৩ সালকে বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানের বছর বললে ভুল হবে না। কিন্তু কীভাবে সাফল্যের দেখা পেলেন শাহরুখ তা কি আপনি জানেন?
২০২৩ সালের শাহরুখের ক্যারিয়ারের পারফরম্যান্স বলছে, চলতি বছরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বক্স অফিস গরম রেখেছেন শাহরুখ। অভিনব চরিত্র, অভিনয়, নাচ কখনও বা শারীরিক ফিটনেস দিয়ে পুরো বছরই দর্শক মাতিয়ে রাখতে দেখা গেছে ৫৮ বছর বয়সী এ তারকাকে।
বয়সকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কীভাবে সারা বছর দর্শক মাতিয়ে রাখলেন শাহরুখ ফিরে দেখা ২০২৩-এ আসুন সে প্রশ্নের উত্তরই এক নজরে দেখে নিই-
ঘটনার শুরু ২০১৮ সালে। ওই সময় বলিউডের জনপ্রিয় আনুশকা শর্মাকে সঙ্গে নিয়ে ‘জিরো’ সিনেমা দর্শকদের উপহার দেন শাহরুখ। কিন্তু শাহরুখের এ উপহার যেন রীতিমতো প্রত্যাখ্যান করল দর্শক। এমন কি শাহরুখ ভক্তরাও।
শূন্য অর্থাৎ ‘জিরো’ সিনেমার ভরাডুবিতে শাহরুখ মনে মনে ঠিক করলেন বড় পর্দায় এভাবে নিজেকে আর দেখতে চান না। নিলেন দীর্ঘ একটা বিরতি। মূলত ওই সময় ভক্তদের অবহেলা একেবারেই মেনে নিতে পারেননি বলিউড বাদশাহ।
দুই বছর যখন এভাবেই কেটে যাচ্ছিল বিশ্বে তখন শুরু হলো মহামারি ‘করোনা’। ওই সময়টাতে ঘরেই কাটিয়েছেন কিং খান। নিজেকে বোঝার জন্যও যথেষ্ট সময় দিয়েছেন। এরপরই যখন চারদিকে করোনায় মৃতের সংখ্যা বাড়তে শুরু করল শাহরুখের মনে আমুল পরিবর্তন হলো। তিনি আবারও নিজেকে প্রমাণ করতে চাইলেন রুপালি পর্দায়।
নিজের ছোট ছেলে আবরাম খানকে শাহরুখ দেখাতে চেয়েছিলেন তার বাবা কত বড় স্টার। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে শাহরুখ পরিষ্কার জানিয়ে দেন, তার মেয়ে সুহানা আর বড় ছেলে আরিয়ান নিজের চোখে দেখেছে তিনি কত বড় স্টার। কিন্তু আবরামকে তিনি সেটা দেখাতে পারেননি। তাই বয়সকে তুরি মেরে নিজেকে ফিট করতে বিরতির সময়গুলোকে কাজে লাগান শাহরুখ।
এরপর নিজেকে গোছানোর সময়গুলোতে ঝামেলা তৈরি করে বড় ছেলে আরিয়ান। মাদক মামলায় ফেঁসে গেলে ছেলেকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন শাহরুখ। তবে ব্যক্তি জীবনে যত ঝামেলাই থাকুক না কেন দর্শকদের ভালোবাসা ফিরে পেতে মরিয়া ছিলেন এ মেগাস্টার।
যার প্রমাণ মেলে চলতি বছর ২০২৩-এ। এ বছরের শুরুতেই অর্থাৎ ২৫ জানুয়ারি দর্শকদের প্রথম ধামাকা দেন শাহরুখ। বলি অভিনেত্রী গ্লামার গার্ল দীপিকা পাড়ুকোনকে সঙ্গে নিয়ে সিদ্ধার্থ আনন্দ পরিচালিত স্পাই থ্রিলার সিনেমা ‘পাঠান’ দর্শকদের উপহার দেন। শাহরুখের নতুনত্ব এতটাই বক্স অফিস আর দর্শক হৃদয়ে ঝড় তোলে যে একের পর এক রেকর্ড ভাঙতে শুরু করে সিনেমাটি।
এরপর বছরের মাঝামাঝি সময় মুক্তি পায় এটলি কুমার পরিচালিত ‘জওয়ান’। পরিচালক অ্যাটলির কারসাজিতে, একই ছবিতে ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি রূপে শাহরুখের অভিনয় আর চমক দর্শক মাতিয়ে রাখে পুরো দমে। রোমান্স আবার অ্যাকশনে ভরপুর শাহরুখের দ্বিতীয় ধামাকা সিনেমা ‘জওয়ান’-ও লুফে নেন দর্শকরা।
আর বছরের একদম শেষে শাহরুখের ইয়ার ইন্ডিং গিফট ছিল ‘ডাঙ্কি’। ডিসেম্বরের শেষদিকে মুক্তি পাওয়া এ সিনেমাটি নিয়ে সিনেমাবোদ্ধাদের আশা ছিল চলতি বছর শাহরুখ বক্স অফিসে ‘হ্যাট্রিক’ করতে চলেছেন।
যদিও শাহরুখের আগের দুই সিনেমার হিসেবে ‘ডাঙ্কি’ পিছিয়ে আছে তবে এ সিনেমাও কিন্তু বক্স অফিস হিট। তাই বলা যায়, ব্যর্থতা থেকে নিজেকে নতুন দমে তৈরি করে চলতি বছর সাফল্যের শিখরে ছিলেন শাহরুখ খান।