অস্ত্রোপচারের সময় এক রোগীকে অ্যানেস্থেসিয়া দিয়েছিলেন চিকিৎসক। এসময় আঞ্চলিক ভাষায় তার সমস্যা নিয়ে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলেন রোগী। কিন্তু আঞ্চলিক ভাষা বুঝতে না পেরে বিরক্ত হয়ে রোগীর মাথায় তিনবার ঘুষি মারেন চিকিৎসক।
ঘটনাটি ঘটে ২০১৯ সালে, চীনের উহানে। তবে সম্প্রতি ওই ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যার সূত্র ধরে সংবাদ প্রকাশ করেছে বিবিসি, নিউইয়র্ক পোস্টসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। এছাড়া অভিযুক্ত ওই চিকিৎসককে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বহিষ্কার করেছে বলে বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে জানা গেছে, ২০১৯ সালে ৮২ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা চোখের অস্ত্রোপচারের জন্য চীনের গুইগাং শহরের একটি হাসপাতালে যান। অস্ত্রোপচারের সময় তাকে অ্যানেস্থেসিয়া দেয়া হয়। তবে ‘লোকাল অ্যানেস্থেসিয়া’ ব্যবহার করায় রোগী বারবার নড়াচড়া করছিলেন এবং চোখে হাত দিচ্ছিলেন। এসময় চিকিৎসক ওই রোগীকে মান্দারিন ভাষায় বারবার সতর্ক করেন। কিন্তু রোগী চিকিৎসকের ভাষা বুঝতে না পেরে নড়াচড়া বন্ধ করেননি। এক পর্যায়ে বিরক্ত হয়ে চিকিৎসক রোগীর মাথায় তিনটি ঘুষি মারেন।
সম্প্রতি চীনের বিশিষ্ট ডাক্তার আই ফেন তার ‘ওয়েবো’ অ্যাকাউন্টে সিসিটিভি ফুটেজটি শেয়ার করেন। ভিডিওটি শেয়ারের কিছুক্ষণের মধ্যেই বেশ ভাইরাল হয়। আর ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর ব্যাপক ক্ষোভে ফেটে পড়েন নেটিজেনরা। বিক্ষোভের মুখে ওই হাসপাতালের প্যারেন্ট গ্রুপ এয়ার চায়না অভিযুক্ত চিকিৎসককে বরখাস্ত করেন। আর চলতি সপ্তাহে হাসপাতালের সিইওকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এছাড়াও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই রোগীর কাছে ক্ষমা চেয়েছে। ক্ষতিপূরণ হিসেবে তাকে ৫০০ ইউয়ান বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫ হাজার ৮০০ টাকা দেয়া হয়েছে।
তবে ওই রোগীর ছেলে দাবি করেছেন, ‘তার মায়ের বাম চোখে অন্ধ হয়ে গেছে।’ যদিও চিকিৎসকের ঘুষির কারণেই এমনটা হয়েছে বলে কোনো মেডিকেল রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, ২০২১ সাল থেকে এয়ার চায়নার সঙ্গে আইনি লড়াই চলছে ডা. আই ফেনের। তার অভিযোগ, এয়ার চায়নার একটি হাসপাতালে চোখের অপারেশনের পরে তিনি দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলতে বসেছিলেন।