দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইশতেহার তৈরি করছে আওয়ামী লীগ। দলটির এবারের ইশতেহারের স্লোগান : স্মার্ট বাংলাদেশ : উন্নয়ন দৃশ্যমান, বাড়বে এবার কর্মসংস্থান।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের গ্র্যান্ড বলরুমে ইশতেহার ঘোষণা করবেন।
প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পর এবার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধে বিশেষ পদক্ষেপ, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং আর্থিক খাতের সুশাসনের ওপর জোর দিয়ে আসন্ন নির্বাচনের ইশতেহার প্রস্তুত করা হয়েছে।
ইশতেহারে বলা হয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে পরিবর্তিত বাস্তবতা ধারণ করার উপযোগী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। স্মার্ট বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে স্মার্ট ও আধুনিক হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাব, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, কোস্ট গার্ড ও বিজিবির দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিকল্পে এসব বাহিনীর জনবল, ভৌত অবকাঠামো, লজিস্টিকস ও যানবাহন, আধুনিক প্রশিক্ষণ সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির ধারা চলমান থাকবে।
মাদক নির্মূল, সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধ ও দমন, মানি লন্ডারিং, গুজব প্রতিরোধ, মানব পাচার রোধসহ উগ্র-জঙ্গীবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও সন্ত্রাসবাদ দমনের লক্ষ্যে চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে।
ডোপ টেস্ট নীতিমালা/বিধিমালা প্রণয়ন করা হবে। বিজ্ঞানভিত্তিক তদন্তের মান উন্নয়নের লক্ষ্যে আরো অধিকসংখ্যক আধুনিক ডিএনএ ল্যাব, ফরেনসিক ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হবে।
সীমান্ত সড়ক নির্মাণ করা হবে যাতে করে সীমান্ত সুরক্ষা এবং যেকোনো ধরনের সীমান্ত অপরাধ প্রতিরোধ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ হিসেবে কর্মরত বিজিবি সদস্যদের জন্য সহজতর হয়।
জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে আধুনিক, উন্নত, মানবিক ও জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের অব্যাহত প্রচেষ্টার কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
উন্নয়ন ও অগ্রগতি
১. আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসমূহের নিয়মিত অভিযানে সন্ত্রাসী জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
২. বাংলাদেশ পুলিশের ক্যাডার কাঠামো পুনর্গঠন করে বিদ্যমান ও নতুন পদসহ মোট ৩ হাজার ১২৩টি পদ সৃজন করা হয়েছে।
৩. পুলিশ, আনসার ও ভিলেজ ডিফেন্স বাহিনীতে নারীদের যোগদানের সুযোগ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
৪. সকল পর্যায়ের পুলিশের রেশন, পোশাক ও অন্যান্য ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
৫. পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ষ্টাফ কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
৬. স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সেবাসমূহ পর্যায়ক্রমে ডিজিটাল করা হচ্ছে। অনলাইন জিডি কার্যক্রম চালু হয়েছে। ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশন চালু করা হচ্ছে। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের জন্য ‘ই-সার্ভিস’ চালু করা হয়েছে।
৭. বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিকল্পে জনবলকাঠামো পুনর্গঠন করে ৩ হাজার ৯৪টি পদ সৃজন করা হয়েছে, ৪৮৪ জন ব্যাটালিয়ন আনসার নিয়োগ করাসহ ৩ হাজার ১০৭ জনকে পদোন্নতি প্রদান করা হয়েছে।
৮. সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং ডিজিটাল বা ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধ শনাক্তকরণ, প্রতিরোধ, দমন ও অপরাধের বিচারের লক্ষ্যে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩’ প্রণয়ন করা হয়েছে।
৯. সরকারের গৃহীত নীতিকৌশলের ফলে সুন্দরবন দস্যুমুক্ত হয় এবং চরমপন্থীদের দৌরাত্ম্য উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পায়। উপকূলীয় এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, মাদক চোরাচালান, মানব পাচার, জলদস্যু ও বনদস্যুদের দমনে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
১০. বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সক্ষমতা বৃদ্ধিকল্পে ৮ হাজার ১৯৭ জন সদস্য নিয়োগ ও ৪ হাজার ২৮২টি নতুন পদ সৃজন করা হয়েছে।
১১. ১৬০ টি নতুন বিওপি নির্মাণ করা হয়েছে এবং আরো ৬৪টি নতুন কম্পোজিট বিওপি নির্মাণাধীন রয়েছে।