নেত্রকোনায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে বরকে স্বামী দাবি করেছেন দুই নারী। এ ঘটনার পর ওই বিয়েটি পণ্ড হয়ে যায়। সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলার কাইলাটি রোডের ‘বিয়ে বাড়ি’ নামে ওই কমিউনিটি সেন্টারে এমন ঘটনা ঘটে।
তবে বরের দাবি, স্ত্রী দাবি করা একজনের সঙ্গে তার বিয়ে হলেও তিনি তাকে তালাক দিয়েছেন। আদালতে এ নিয়ে মামলাও চলছে। অপরজনের বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বর।
বর সাজ্জাদ হোসেন নেত্রকোনার পার্শ্ববর্তী সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। তিনি জেলার মদন উপজেলার মাখনা গ্রামের আসাদুজ্জামানের ছেলে।
এ ব্যাপারে কমিউনিটি সেন্টারের মালিক সাবেক মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদ আহমদ ফকির জানান, আমার কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া নিয়েছিলেন কুড়পাড় এলাকার এক ব্যক্তি। তিনি মেয়ের বিয়ে দিচ্ছিলেন। পরে বরের স্ত্রী পরিচয়ে দুই নারী পুলিশ নিয়ে আসেন। এতে বিয়ে না দিয়ে মেয়েকে নিয়ে চলে যান তার বাবা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কুড়পাড় এলাকার এক ব্যক্তি তার মেয়ের জন্য বিয়ের আয়োজন করেন। পরে খাওয়া-দাওয়ার পর্ব চলার সময় বিয়ের অনুষ্ঠানে হঠাৎ হাজির হন দুই নারী। তাদের দাবি, তারা দুজনই বরের আগের স্ত্রী। তাদের যাওয়ার পরপরই বিয়ের অনুষ্ঠানে পুলিশ হাজির হয়। এ ঘটনায় পণ্ড হয়ে যায় বিয়ের অনুষ্ঠান।
সাজ্জাদের দ্বিতীয় স্ত্রী পরিচয় দেয়া নারী বলেন, ‘সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে গত বছরের ১ জুলাই তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর নিয়মিত যোগাযোগও ছিল। তবে কয়েকমাস আগে যোগাযোগ কমিয়ে দেন সাজ্জাদ। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তার (সাজ্জাদের) আগেরও এক স্ত্রী রয়েছেন। তার সঙ্গেও মামলা চলমান। এরপর আরও একটি মেয়ের জীবন নষ্ট করতে বিয়ের আয়োজন চলছে। বিষয়টি শুনে তাৎক্ষণিকভাবে আমি পুলিশ সুপারের কাছে বিয়ে বন্ধের জন্য লিখিত অভিযোগ দিই। পরে পুলিশ গিয়ে বিয়ে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। আমি তার বিচার চাই।’
সাজ্জাদের প্রথম স্ত্রী পরিচয় দেয়া নারী বলেন, ‘আমার সঙ্গে সাজ্জাদের তিন বছর আগে বিয়ে হয়। এরপর থেকে আমরা একসঙ্গেই ময়মনসিংহে ছিলাম। পরে সাজ্জাদ বদলি হয়ে ধর্মপাশা চলে গেলে আমার সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে। বছরখানেক আগে আমার স্বামী আরেকজনকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। সেখানেও আমি উপস্থিত হয়ে বিয়ে বন্ধ করে দেই। পরে শুনি তার আত্মীয় এক মেয়েকে বিয়ে করেন। এরপর আমি তার বিরুদ্ধে মামলা করি। মামলাটি এখনো চলমান।
তবে বর সাজ্জাদ হোসেন স্ত্রী পরিচয় দেয়া ওই নারীকে বিয়ের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘তাকে আমি তালাক দিয়েছি। তার সঙ্গে আমার মামলা চলছে। বিষয়টি আমি আইনিভাবে মোকাবিলা করবো।’ তবে অপরজনকে আত্মীয় দাবি করে বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেন সাজ্জাদ হোসেন।
এ ব্যাপারে নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, এক নারী পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত দিয়েছিলেন, ঘটনাটা দেখার জন্যও বলা হয়। পরে আমরা পুলিশ পাঠিয়ে জানতে পারি যার সঙ্গে বিয়ে হচ্ছে তার আরও সাত মাস আগেই নাকি বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু এখন তালাক দিয়েছেন। আমরা থানায় আসা নারীদের আইনি পরামর্শ দিয়েছি।