ব্রাজিলের ফুটবল ভালো সময় কাটাচ্ছে না। এবার মাঠের বাইরেও জটিলতায় পড়েছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। গত ৭ ডিসেম্বর অনিয়মের অভিযোগে ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশনের (সিবিএফ) প্রেসিডেন্ট এওনালদো রদ্রিগেজকে ছাঁটাই করে রিও ডি জেনেইরোর একটি আদালত। সেই রায়ে এডনালদোসহ গোটা বোর্ডকেই ৩০ দিনের মধ্যে পদ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সিবিএফের কাছে এই ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়ে পত্রও দেওয়া হয়েছিল।
নিম্ন আদালতের দেওয়া পদ ছাড়ার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সিবিএফের প্রেসিডেন্ট এডনালদো গিয়েছিলেন উচ্চ আদালতে। কিন্তু সেখানেও বহাল থাকে রায়। আর সিবিএফের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দেওয়ার ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপই এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান নয়। এরই মধ্যে ফিফার পক্ষ থেকেও শুরু হয়েছে তোরজোড়। পত্র পাঠিয়ে ব্রাজিলের ফুটবল সংস্থাকে জানিয়েছে, এডনালদো রদ্রিগেজকে সরানোর জন্য বর্তমান তৎপড়তা বন্ধ করতে হবে। ফিফার আইন অমান্য করে এডনালদো ও তার বোর্ডকে সরিয়ে দিলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে ব্রাজিলের ফুটবলকে।
ফিফার আইন অনুযায়ী, ফুটবল ফেডারেশনে তৃতীয় কোনো পক্ষ হস্তক্ষেপ করলে সেই সদস্য দেশকে বিভিন্ন মেয়াদে নিষেধাজ্ঞা বা স্থগিতাদেশ প্রদান করতে পারবে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এর আগে এই ধরনের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছিল পাকিস্তান ও ভারত। এমন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হতে পারে ব্রাজিলের বিরুদ্ধেও।
আদালতের রায় অনুযায়ী, আগামী ৭ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট পদে এডনালদোর শেষদিন। নির্দেশ অনুজাই সেদিন তাকে পদত্যাগ করতেই হবে। বিষয়টি জানা আছে ফিফারও। তাই ৮ জানুয়ারি বিশেষ এক বৈঠকে বসবে ফিফা ও দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবল।
এ বিষয়ে সিবিএফকে বিস্তারিত জানিয়ে পত্র দিয়েছে ফিফা। তাতে বলা হয়েছে, ফিফা এবং কনমেবল দৃঢ়ভাবে জোর দিয়ে বলতে চায়, নির্বাচন বা নির্বাচনের আহ্বানসহ, এই ধরনের কোনো কার্যক্রম না হওয়া পর্যন্ত, সিবিএফকে প্রভাবিত করে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না। তবে যদি এমন পদক্ষেপকে সম্মান না করা হয়, তবে ফিফার কাছে বিষয়টি বিবেচনা ও সিদ্ধান্তের জন্য প্রাসঙ্গিক সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থার কাছে জমা দেওয়া ছাড়া আর কোনও বিকল্প থাকবে না। যার ফলাফল হিসেবে স্থগিতাদেশও আসতে পারে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে যৌন কেলেঙ্কারির কারণে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েন সিবিএফের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রোজারিও ক্যাবোকালো। এ সময় অন্তর্বতীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন এডনালদো। পরবর্তীতে নির্বাচন করে নিয়ত্মতান্ত্রিকভাবে এই পদে বহাল হন। ২০২৬ সাল পর্যন্ত মেয়াদ আছে তার।
কিন্তু এক বছরের মধ্যেই তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ আনেন সিবিএফের কয়েকজন নির্বাহী কর্মকর্তা। ব্যাপারটা আদালত পর্যন্ত গড়ালে ডিসেম্বরের শুরুতেই আদালত এই রায় দেয়। এতে বলা হয়, এডনালদোকে তার পদ থেকে ছাঁটাই করে ৩০ দিনের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে হবে। এখন এই রায়ের প্রেক্ষিতে নিষেধাজ্ঞার মুখে ব্রাজিলের ফুটবল।