মাদারীপুরের কালকিনিতে মাদারীপুর-৩ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. আবদুস সোবাহান মিয়া গোলাপের পক্ষে বৈঠা হাতে একটি মিছিলের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটিতে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। এতে ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
এক মিনিট ২৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, মাদারীপুর-৩ আসনের নির্বাচনী এলাকা কালকিনি উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে স্থানীয় সংসদ সদস্য ড. আবদুস সোবাহান মিয়া গোলাপের সমর্থক লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল হক বেপারীর বৈঠা হাতে একটি মিছিল বের করেন।
গত ১৯ ডিসেম্বর বিকেলে লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের প্রধান সড়ক হয়ে লক্ষ্মীপুর বাজারের মধ্যে দিয়ে কয়েকশ কর্মী হাতে কাঠের তৈরি বৈঠা নিয়ে নৌকার পক্ষে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিয়ে মিছিলটি করেন।
সংশ্লিষ্ট ভিডিও ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই মিছিলের পরে ভীতিকর পরিস্থিতি ভোটারদের মধ্যে কমিয়ে আনতে গত ২১ ডিসেম্বর স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের সমর্থক লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী তোফাজ্জেল হোসেন গেন্দু কাজীর নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হয়।
সেই মিছিলে হামবোমা বিস্ফোরণে আহত হন বেশ কয়েকজন। পরবর্তীতে ২১ ডিসেম্বর রাতে এ ঘটনায় সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুল হক বেপারীসহ ৫৭ জনকে আসামি করে গেন্দু কাজীর ভাই কাজী মোফাজ্জেল হোসেন বাদী হয়ে কালকিনি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পর দিন ২২ ডিসেম্বর বিকেলে মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খান ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুস সোবাহান গোলাপ লক্ষ্মীপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে একটি নির্বাচনী সভার আয়োজন করে নৌকার কর্মীদের উজ্জীবিত করে বক্তব্য রাখেন।
পরে ২৩ ডিসেম্বর ভোর রাতে স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের কর্মী লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য এসকান্দার খাঁনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে নৌকার সমর্থকরা। এরপরই ১৯ ডিসেম্বরের নৌকার পক্ষে বৈঠা হাতে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের এই মিছিলের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হতে শুরু করে। এই নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুরো জেলাজুড়ে এখন ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাদারীপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম বলেন, ‘লক্ষ্মীপুরের আবদুস সোবাহান মিয়া গোলাপের সমর্থকরা কাঠের বৈঠা হাতে নিয়ে মিছিল করে ভোটারদের ভয় দেখিয়ে আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন। শুধু তাই নয় ওই বৈঠা মিছিলের পর থেকেই পুরো লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে একটি নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছেন নৌকার সমর্থকরা। বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
এ ব্যাপারে গণমাধ্যমে কথা বলতে রাজি নন ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ।
তবে, নাম না প্রকাশ করার শর্তে তার এক সমর্থক জানান, পরিস্থিতি শান্ত আছে। এটা নিয়ে চুপচাপ থাকা ভালো।
মাদারীপুর-৩ আসনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ বলেন, বৈঠাহাতে মিছিলের অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্ত ফজলুল হক বেপারীকে কার্যালয়ে ডেকে আনা হয়। পরে তিনি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে মুচলেকা দিয়েছেন, ভবিষ্যতে এমন কর্মকাণ্ড করবেন না বলে তিনি অঙ্গিকারও করেছেন।