মাত্র কয়েকদিন পরেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনকে ঘিরে প্রতিদ্বন্দ্বীরা যখন চষে বেড়াচ্ছেন ভোটের মাঠ। হাজার হাজার নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠঘাটে চষে বেড়াচ্ছেন ভোটের আশায়। তখন পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে বিপরীত পথে হাঁটছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মোস্তফা হাওলাদার।
ভোটের খরচ কমাতে ও অপচয়রোধে ভাড়ায় চালিত একটি অটোরিকশায় চড়ে নিজের ঈগল প্রতীকে ভোট চাইছেন গোলাম মোস্তফা। পোস্টার টাঙাতে বাঁশের মই তৈরি করে নিজে উঠছেন বিদ্যুতের খুঁটিতে। তার সঙ্গে নেই কোনো নেতাকর্মী। এ কাজে সহযোগিতা করছেন কেবল অটোরিকশা চালক। তাকে নিয়েই রেকর্ডিং করা মাইকিং (ঈগল মার্কায় ভোট চাই) ও হাতে ছোট পোস্টার (হ্যান্ডবিল) নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন শহর থেকে গ্রামে, গ্রাম থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। নিজের প্রচার নিজেই করছেন তিনি।
শরীয়তপুর-১ (সদর-জাজিরা) আসনে আওয়ামী লীগের হেডিওয়েট প্রার্থীসহ ৫ জন প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মো. গোলাম মোস্তফা হাওলাদার। নিজের প্রচার নিজে করা নিজের পোস্টারিং করা বিষয়টি নজর কেড়েছে অনেক ভোটারদের।
তফসিল ঘোষণার পরই শরীয়তপুর-১ আসনের প্রথম মনোনয়ন কেনেন জাজিরা উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নের মো. গোলাম মোস্তফা। পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী। বাৎসরিক আয় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ সাড়ে ৭ লাখ টাকা।
জানা গেছে, ব্যতিক্রমধর্মী প্রচারণায় এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। ভাড়ায় নেয়া একটি অটোরিকশা নিয়ে প্রতিদিন তিনি অন্তত ৫ থেকে ৬টি ইউনিয়নে গণসংযোগ ও প্রচার-প্রচারণা করে থাকেন। নির্বাচনী কাজে তাকে সহযোগিতা করছেন অটোরিকশা চালক। এই অটোরিকশায় দুইটি মাইক লাগানো রয়েছে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পোস্টার ও লিফলেট নিয়ে বের হন মোস্তফা। এছাড়াও সঙ্গে মই, প্লাস্টিকের দড়ি ও স্ট্যাপ্লার মেশিনসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে বের হন তিনি। নিজেই মই দিয়ে বিভিন্ন উঁচুস্থানে উঠে নির্বাচনী পোস্টার রশিতে টাঙিয়ে দেন।
এ বিষয়ে মো. গোলাম মোস্তফা হাওলাদার সময় সংবাদকে বলেন, ‘আমি কখনোই আচরণবিধি লঙ্ঘন করছি না। একজন সংসদ সদস্য প্রার্থীর যে পরিমাণে টাকা খরচ করার সুযোগ রয়েছে আমার সেই পরিমাণে টাকাই নেই। তাই আমি নিজের কাজ নিজেই করছি। তাছাড়া আমি কোনো দলের নেতা বা কর্মী ছিলাম না। আমার নিজেরও কোন কর্মী নেই। তাই আমি নিজের কাজ নিজেই করছি। এতে আমার খরচ অনেক কম হচ্ছে এবং সাধারণ মানুষের কাছেও আমি সহজেই যেতে পারছি।’
আমার সাধ্যমত চেষ্টা করছি জনগণের কাছে আমার বার্তা পৌঁছে দিতে। প্রতিদিন অন্তত পাঁচ থেকে ছয়টি ইউনিয়নে যাতায়াত করছি। বিভিন্ন স্থানে আমি আমার পোস্টার নিজেই লাগাচ্ছি এবং জনগণের সঙ্গে কথা বলে ভোট প্রার্থনা করছি। নির্বাচনের আগ পর্যন্ত আমি এভাবেই কার্যক্রম চালিয়ে যাব। আমি যদি ৩ লাখ ৬৫ হাজার ভোটারদের কাছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের এবং শহরের সব কয়টি অলিগলিতে ঘুরে বেড়াতে পারি এবং সাধারণ মানুষের কাছে ভোট চাইতে পারি তাহলে সাধারণ মানুষ আমাকে অবশ্যই ভোট দিবে। সাধারণ মানুষের ভোটের আশ্বাসেই আমি আরও সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। ভোটের পরিবেশ সুন্দর থাকলে এবং সাধারণ মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে ভোট দিতে পারলে আমি জয়লাভ করবো ইনশাআল্লাহ।’
নিজেকে পরিবর্তনের মাধ্যমেই দেশকে পরিবর্তন সম্ভব হবে এই বিশ্বাস নিয়ে বিজয়ের স্বপ্ন দেখছেন এই স্বতন্ত্র প্রার্থী।