যিশুখ্রিষ্টের জন্মদিন উপলক্ষে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মহাধুমধামে পালিত হচ্ছে বড়দিন। কিন্তু চলমান ইসরাইল ও হামাসের যুদ্ধের কারণে এবার বড়দিনেও নিরব যিশুখ্রিষ্টের জন্মস্থান ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের বেথলেহেম। এরমধ্যে বড়দিনের বার্তায় পোপ ফ্রান্সিস বক্তব্যে উঠে এসেছে বেথেলহেম। তিনি বলেন, ‘আমাদের মন বেথেলহেমে পড়ে আছে।’
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় বড়দিন উদযাপনের সূচনা করেন পোপ ফ্রান্সিস। এ সময় সেখানে প্রায় ৬ হাজার ৫০০ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
বড়দিন উপলক্ষে বক্তব্য দেয়ার সময় পোপ ফ্রান্সিস বলেন, ‘আমাদের মন বেথেলহেমে পড়ে আছে; যেখানে আরও একবার অস্ত্র ও সংঘর্ষের কাছে শান্তির রাজপুত্রের নিরর্থক যুদ্ধের যুক্তি ব্যর্থ হয়েছে।’
ক্যাথলিক এই ধর্মগুরু আরও বলেন, ‘ক্রিসমাসের আসল বার্তা হল শান্তি এবং ভালোবাসা। মানুষকে জাগতিক সাফল্য এবং ভোগবাদের পূজাতে আচ্ছন্ন না হওয়ার আহ্বান জানানো।’
পোপ ফ্রান্সিস বলেন, ইতিহাসের বিভিন্ন বিখ্যাত মানুষেরা সব সময় বলেছেন, এই বিশ্ব পার্থিব শক্তি, ক্ষমতা, খ্যাতি এবং গৌরবে আচ্ছন্ন। যা সব সময় সাফল্য, ফলাফল, সংখ্যা এবং পরিসংখ্যানের পরিপ্রেক্ষিতে সবকিছু পরিমাপ করে। তবে আজকের এই রাতে ভালোবাসা ইতিহাস বদলে দেয়।
বেথেলহেম ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরের একটি শহর। খ্রীষ্টধর্মবলম্বীরা বিশ্বাস করেন আজ থেকে ২ হাজার বছর পূর্বে যিশু খ্রিস্ট এখানে জন্মগ্রহণ করেন। প্রতি বছরই মহাধুমধামে বড়দিন উদযাপিত হয় যিশুখ্রিষ্টের জন্মস্থান ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের বেথলেহেমে। কিন্তু এ বছর সম্পূর্ণ ভিন্ন বেথেলহেমের চিত্র। হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে চলমান সংঘাতের কারণে এবার জনশূন্য যিশুখ্রিষ্টের জন্মস্থান।
তবে এবার যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় যিশুকে ইনকিউবেটরে থাকা শিশু হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। অবরুদ্ধ গাজার অসহায় শিশুদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করার জন্যই এ শিল্পকর্ম করা হয়েছে। গাজার পশ্চিম তীরের বেথেলহেমের চার্চ অফ নেটিভিটির বাইরে শিল্পকর্মটি স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে একটি ইনকিউবেটরের ভেতরে লাল-সাদা রঙের কেফিয়াহ’র চাদরের ওপর ব্রোঞ্জের যিশুকে ভাস্কর্যরূপে তুলে ধরা হয়েছে।
এ শিল্পকর্মটি করেছেন ফিলিস্তিনি শিল্পী রানা বিশারা এবং ভাস্কর সানা ফারাহ বিশারা।