দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ঠাকুরগাঁও-২ আসনে জমে উঠেছে নির্বাচনী মাঠ। প্রার্থীদের প্রচারণায় এই মাঠ এখন দারুণ ব্যস্ত। দিনভর ও রাতের একটা অংশজুড়ে প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। এদিকে নিজ দলের (নৌকা মার্কা) প্রার্থীকে বিজয়ী করতে কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সাত নেত্রী প্রচারণায় অংশ নিতে ঠাকুরগাঁওয়ে এসেছেন। তারা নির্বাচনী এলাকাগুলো চষে বেড়ানোর পাশাপাশি উঠান বৈঠক, বিভিন্ন সভা সমাবেশও করছেন।
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে ঠাকুরগাঁও-২ আসনের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সমির উদ্দিন স্মৃতি কলেজ মাঠে নৌকার প্রার্থীর নির্বাচনী সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত হয়ে ভোটারদের কাছে ভোট চান কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শবনম জাহান শীলা। এ সময় নৌকার প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম সুজনসহ আওয়ামী লীগ নেতারাও ভোট প্রার্থনা করেন।
নির্বাচনী সভায় প্রধান বক্তা শবনম জাহান বলেন, ‘ঠাকুরগাঁও-২ আসনবাসী সৌভাগ্যবান, তারা মাজহারুল ইসলাম সুজনের মতো একজন নেতা পেয়েছে। যে পরিবার সারা জীবন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছে, নিশ্চয়ই তার সুযোগ্য সন্তান ও তার পরিবার এই ঠাকুরগাঁওকে উন্নয়নের শেখরে নিয়ে যাবে।’
এ সময় তিনি সরকারের উন্নয়নে বিভিন্ন স্লোগানের মাধ্যমে নৌকার প্রার্থী সুজনের জন্য ভোট প্রার্থনা করেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর উদ্দেশ্যে নৌকা প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে ষড়যন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কাজ করছেন। এক মাস আগে যারা বিভিন্ন সভা সমাবেশে বলেছিলেন আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক, যেই নৌকা পাবে আমরা তার হয়ে কাজ করব। কিন্তু আজ তাদের কাছে নৌকা কালো হয়ে গেছে। তারা নৌকাকে হারাতে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ভালো কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আমি। নৌকার প্রার্থী আমি।’
এ সময় তিনি ভোটারদের সুজন বলেন, ‘আপনারা আমার বাবাকে যেভাবে বারবার ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন, তেমনি নৌকাকে বিজয় করতে ও শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে আমাকেও ভোট বিজয় করবেন।’
নির্বাচনী সভায় ঠাকুরগাঁও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেরা বেগমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. দবিরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাবুর রহমান বাবলু, সাধারণ সম্পাদক দীপক কুমার রায়, কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক এমপি শিরীন নাঈম পুনম, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক সুলতানা রাজিয়া পান্না, সাংগঠনিক সম্পাদক মরিয়ম বিনতে হোসাইন খেয়া, প্রচার-প্রকাশনা সম্পাদক মেহেনিগার হোসেন তন্ময়, দপ্তর সম্পাদক গোলেনতাজ রুবি, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. জেবুন্নাহার ও কার্যকরী সদস্য নীপা সরকার।
এদিকে এ আসনটিতে আওয়ামী লীগের আরেক হেভিওয়েট প্রার্থী সদ্য পদত্যাগ করা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আসলাম জুয়েল ট্রাক মার্কার প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আসনটির প্রতিটি ইউনিয়নে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘ট্রাক মার্কের বিজয় নিশ্চিত জেনে তারা আমাদের নামে বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে। প্রচারণার শুরু থেকেই নৌকার প্রার্থী ও তার সমর্থকরা একের পর এক হুমকি ধামকি দিয়ে চলেছে। ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালীন অনেক উন্নয়ন করেছি। এবার এমপি নির্বাচিত হলে আরও উন্নয়ন করব, বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ যা করা লাগে আমি তাই করব। সাধারণ মানুষ আমাকে চায়। তাই তিনি আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটারদের কেন্দ্রে এসে নিজের মতামত প্রকাশের আহবান জানাই।’
এ আসনে মোট ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও এই দুইজন প্রার্থী নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালিয়ে গেলেও অন্য প্রার্থীরা মাঠে নেই।