প্রতি বছরই মহাধুমধামে বড়দিন উদযাপিত হয় যিশুখ্রিষ্টের জন্মস্থান ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের বেথলেহেমে। বড়দিন ঘনিয়ে এলেই ইসরাইলের অধিকৃত শহরটিতে দর্শকের উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়। কিন্তু এ বছর সম্পূর্ণ ভিন্ন বেথেলহেমের চিত্র। হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে চলমান সংঘাতের কারণে এবার জনশূন্য যিশুখ্রিষ্টের জন্মস্থান।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, এবার যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় যিশুকে ইনকিউবেটরে থাকা শিশু হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। অবরুদ্ধ গাজার অসহায় শিশুদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করার জন্যই এ শিল্পকর্ম করা হয়েছে। গাজার পশ্চিম তীরের বেথেলহেমের চার্চ অফ নেটিভিটির বাইরে শিল্পকর্মটি স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে একটি ইনকিউবেটরের ভেতরে লাল-সাদা রঙের কেফিয়াহ’র চাদরের ওপর ব্রোঞ্জের যিশুকে ভাস্কর্যরূপে তুলে ধরা হয়েছে।
এ শিল্পকর্মটি করেছেন ফিলিস্তিনি শিল্পী রানা বিশারা এবং ভাস্কর সানা ফারাহ বিশারা।
এদিকে, বড় উৎসব বড়দিনের প্রাক্কালে অর্থাৎ স্থানীয় সময় রোববার (২৪ ডিসেম্বর) ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার আল-মাগাজি শরণার্থীশিবিরে ইসরাইলি বিমান হামলায় অন্তত ৭০ জন নিহত হয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ ওই অঞ্চলে অসংখ্য পরিবার বাস করেন।
গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এতে দেশটির ১২০০ মানুষ নিহত হয়েছেন, আর আহত হয়েছেন ৮ হাজার ৭৩০ জন। হামাসের হামলার জবাবে ৭ অক্টোবরই গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরাইল। এর পর আড়াই মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও গাজায় নির্বিচার হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি সেনারা। এ হামলা থেকে মসজিদ, বিদ্যালয়, হাসপাতাল, আশ্রয়শিবির – কিছুই বাদ যায়নি।
ইসরাইলি হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। এছাড়াও আহত হয়েছেন ৫৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। আর উদ্বাস্তু হয়েছেন গাজার ২৩ লাখের মধ্যে ১৮ লাখের বেশি বাসিন্দা।