৮ ফেব্রুয়ারির সাধারণ নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকার বিষয়ে পিটিআই-এর রিজার্ভেশনগুলো অপসারণ করতে গতকাল পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনকে (ইসিপি) নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত পিটিআইকে গতকাল ইসিপির কাছে তার অভিযোগ জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় এবং পাকিস্তানের অ্যাটর্নি জেনারেল (এজিপি) মনসুর উসমান আওয়ানকে এ বিষয়ে তার ভূমিকা পালনের নির্দেশ দেয়।
বিচারপতি সরদার তারিক মাসুদ, আতহার মিনাল্লাহ এবং সৈয়দ মনসুর আলীর সমন্বয়ে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চ নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড চেয়ে দলের আবেদনের শুনানি করে এ নির্দেশনা জারি করে। শুনানির আগে, সুপ্রিম কোর্ট এজিপি আওয়ানের পাশাপাশি নির্বাচনী পর্যবেক্ষণ সংস্থাকে তলব করেছিল। আদালত কার্যক্রম শুরুর সাথে সাথে সুপ্রিম কোর্ট এজিপিকে এ বিষয়ে সহায়ক হিসাবে কাজ করার নির্দেশ দেয়।
পিটিআই-এর আশঙ্কার জবাবে বিচারপতি মিনাল্লাহ মন্তব্য করেন, ‘একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকার বিষয়ে দলের উদ্বেগ বৈধ বলে মনে হচ্ছে, কারণ উসমান দারের বাসভবনের ঘটনাগুলোও সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছিল’। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন একটি একক রাজনৈতিক দল কোণঠাসা হচ্ছে?
পিটিআইয়ের সাবেক নেতা উসমান দারের মা গত মঙ্গলবার পিএমএল-এন নেতা খাজা আসিফ এবং পুলিশের বিরুদ্ধে তাদের শিয়ালকোটের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে হেনস্থা করার অভিযোগ করেছিলেন। আসিফ ও শিয়ালকোট পুলিশ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ইসিপি কর্মকর্তাদের দিকে ইঙ্গিত করে বিচারপতি মিনাল্লাহ বলেন, ‘একটি ফ্রন্টে নির্বাচন হচ্ছে, আর এখানে আপনি আদিয়ালা কারাগারে মামলা পরিচালনা করছেন’। বিচারক পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘এটাই কি আপনার আচরণের পদ্ধতি? আপনার ওপর নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে’। তিনি আরো বলেন, ‘আপনার আচার-আচরণ ইঙ্গিত দেয় যে, কোনো লেভেল প্লেয়ি ফিল্ড নেই’।
মেইনটেন্যান্স অব পাবলিক অর্ডারের (এমপিও) অধীনে ইসিপি জারি করা আদেশ স্থগিত করছে না কেন? প্রশ্ন করেন বিচারপতি মাসুদ।
বিচারক যোগ করেছেন যে, আদালত শিগগিরই একটি লিখিত রায় জারি করবে এবং ইসিপিকে পিটিআইয়ের সমস্ত উদ্বেগ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করে সমাধান করতে বলেছে।
একদিন আগে দায়ের করা পিটিশনে পিটিআই চেয়ারম্যান গহর আলি খান বলেছেন, দলটিকে কোনো বৈষম্য ছাড়াই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অনুমতি দেওয়া উচিত। অ্যাডভোকেট শোয়েব শাহীনের মাধ্যমে দায়ের করা এক পিটিশনে এ অনুরোধ করা হয়, যেখানে ফেডারেশন, নির্বাচনী পর্যবেক্ষণ সংস্থা, কেপি, পাঞ্জাব, সিন্ধু এবং বেলুচিস্তানের প্রধান সচিবদের বিবাদী হিসাবে নাম দেওয়া হয়েছিল।
এর আগে ১৯ ডিসেম্বর পিটিআই ইসিপির সাথে যোগাযোগ করে, কিন্তু নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও সুষ্ঠুতা নিশ্চিতে কোনো আদেশ জারি করতে ব্যর্থ হয়েছিল। এ পরিস্থিতি দেশের অখ-তার ক্ষতি করছে, পিটিশনটি যুক্তি দিয়েছিল যে সংক্ষুব্ধ অনুভূতি যোগ করে, আবেদনকারী তারপর এলএইচসি, রাওয়ালপিন্ডি বেঞ্চের কাছে একটি আবেদন করেছিলেন, যা এখনও মামলার শুনানি হয়নি।
আবেদনে বলা হয়, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব ইসিপির। তবে, এটি যোগ করেছে, জেলা প্রশাসনগুেি াপিটিআইকে অন্যান্য দলের সাথে সমানভাবে আচরণ করছে না। এমনকি পিটিশনে অভিযোগ করা হয়েছে, নির্বাচনের তফসিল জারির পরেও পিটিআইকে কর্মীদের সম্মেলন, কর্নার মিটিং বা এই জাতীয় কোনো রাজনৈতিক সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। এছাড়াও, রাজনৈতিক কর্মকা-ের কারণে এফআইআর নথিভুক্ত করা হচ্ছে, পিটিআই নেতাকর্মীদের বাড়িতে অভিযান চালানো হচ্ছে এবং এমপিওর ৩ ধারার আদেশ দেওয়া হচ্ছে, পিটিশনে অভিযোগ করা হয়েছে।
এই ‘নৃশংসতা’ সংবিধান, নির্বাচন আইন, ২০১৭ লঙ্ঘন করে উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে যে, এ ধরনের কাজ বেআইনি এবং অত্যাচারী এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের বিরুদ্ধে করা হচ্ছে।