বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে ২০২৩। শোবিজ জগতের জন্য বছরটি ছিল বেশ ঘটনাবহুল। বছরজুড়ে তারকাদের বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর ঘটনা শিরোনামে উঠে এসেছে। সেই সঙ্গে ২০২৩ সাল ছিল বিষাদের। এ বছর দেশের কয়েকজন অভিনেতা-অভিনেত্রীকে হারিয়েছে দেশ। ২০২৩ সালে না ফেরার দেশে চলে যাওয়া তারকাদের কথা পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো–
চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুক
ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ও সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন পাঠান ফারুক মারা যান ১৫ মে। সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
এম খালেকুজ্জামান
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অভিনেতা এম খালেকুজ্জামান ২১ মার্চ নিজ বাসায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। খালেকুজ্জামান স্কুল-কলেজ জীবনে অসংখ্য মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। বিটিভিতে প্রথম নওয়াজেশ আলী খানের প্রযোজনায় ‘সর্পভ্রমে রজ্জু’ নাটকে অভিনয় করেন তিনি।
পিয়ারী বেগম
৩০ মে বাংলাদেশের প্রথম সবাক চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’-এর অন্যতম নারী চরিত্রে অভিনয় করা পিয়ারী বেগম নিজ বাসায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
রাজীব আশরাফ
‘হোক কলরব ফুলগুলো সব/ লাল না হয়ে নীল হলো ক্যান– অর্ণবের গাওয়া তুমুল জনপ্রিয় এ গানসহ আরও অনেক গীতিকবিতার রচয়িতা রাজীব আশরাফ ১ সেপ্টেম্বর মারা গেছেন। মাত্র ৩৮ বছর বয়সে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
সোহানুর রহমান সোহান
স্ত্রীর মৃত্যুর এক দিন পরই ১৩ সেপ্টেম্বর তিনি উত্তরার নিজ বাসায় ঘুমের মধ্যে মারা যান সোহানুর রহমান সোহান। বহু সফল চলচ্চিত্রের নির্মাতা তিনি। তার হাত ধরেই চলচ্চিত্রে আসেন সালমান শাহ, মৌসুমী, পপি, ইরিন ও শাকিব খান।
জিনাত বরকতুল্লাহ
একুশে পদকপ্রাপ্ত নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী জিনাত বরকতউল্লাহ ২০ সেপ্টেম্বর নিজ বাসায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের ধারায় নৃত্যচর্চার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন জিনাত বরকতউল্লাহ।
সৈয়দ সালাহউদ্দীন জাকী
‘ঘুড্ডি’খ্যাত নির্মাতা সৈয়দ সালাহউদ্দীন জাকী ১৮ সেপ্টেম্বর ইউনাইটেড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
হুমায়রা হিমু
২ নভেম্বর মারা যান অভিনেত্রী হুমায়রা হিমু। জানা যায়, তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
নাদিরা বেগম
ভাওয়াইয়া শিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা নাদিরা বেগম ৬ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।
তারেক মাহমুদ
রাজধানীর কমিউনিটি হাসপাতালে মারা যান নাট্যনির্মাতা ও অভিনেতা তারেক মাহমুদ। ২৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
শফি বিক্রমপুরী
চলচ্চিত্রকার ও রাজনীতিবিদ শফি বিক্রমপুরী ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন তিনি।
পান্না কায়সার
অভিনেত্রী শমী কায়সারের মা শহীদজায়া অধ্যাপক পান্না কায়সার ৪ আগস্ট রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যান। ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্ম গড়ে তোলা’র স্লোগানে পরিচালিত শিশু-কিশোরদের সংগঠন খেলাঘর নিয়ে আজীবন সক্রিয় ছিলেন।
বুলবুল মহলানবীশ
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক ও প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী বুলবুল মহলানবীশ ১৪ জুলাই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ১৭ জুলাই রাষ্ট্রীয় সম্মান ও ফুলেল শ্রদ্ধায় শেষ বিদায় জানানো হয় তাঁকে।
মিতা চৌধুরী
দেশের প্রথিতযশা নাট্যশিল্পী মিতা চৌধুরী ২৯ জুন মারা গেছেন। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে লন্ডনে চিকিৎসাধীন ছিলেন মিতা।
মোহন খান
নাট্যনির্মাতা, নাট্যকার ও প্রযোজক মোহন খান মারা গেছেন ৩০ মে। ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয়েছে। তাঁর পরিচালিত প্রথম নাটক ‘আমার দুধমা’ বিটিভিতে প্রচার হয়। তাঁর লেখা ও পরিচালনায় নাটক ‘সমুদ্রে গাঙচিল’, ‘সেই আমরা’, ‘নীড়ের খোঁজে গাঙচিল’, ‘জেগে উঠো সমুদ্র’, ‘মেঘবালিকা’, ‘দূরের মানুষ’, ‘আঙ্গুর লতা’, ‘হৃদয়পুরের গল্প’ ইত্যাদি।