গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এতে প্রায় ১২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়। এরপরেই গাজায় পাল্টা হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এখন পর্যন্ত সেখানে হামলা অব্যাহত রয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান হামলার কারণে তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে। সেখানে একদিকে লোকজন বাস্তূচ্যুত হয়ে পড়েছে অন্যদিকে খাবার, পানির মতো নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের হাহাকার আরও তীব্র হচ্ছে। সেখানে যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে।
কিন্তু ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজা উপত্যকায় যেকোনো ধরনের যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, গাজা আগ্রাসনের জন্য যেসব লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে তার সবগুলো অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত তেল আবিব যুদ্ধ বন্ধ করবে না।
হামাসের হাতে আটক ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্ত করে নেওয়ার জন্য যখন তেল আবিবের ওপর অভ্যন্তরীণ চাপ তুঙ্গে রয়েছে এবং গাজা উপত্যকায় একটি যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা করে বন্দিদের মুক্ত করার লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চলছে তখনই এমন বক্তব্য দিলেন নেতানিয়াহু।
গত ৭৫ দিন ধরে গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে তেল আবিবের গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ডের কারণে বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। কিন্তু সবকিছু উপেক্ষা করেও সেখানে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
নেতানিয়াহু বুধবার এক বিবৃতিতে বলেন, যেসব লক্ষ্যে গাজায় অভিযান চলছে তার একটি হচ্ছে হামাসকে নির্মূল করা। তিনি বলেন, আমাদের সব বন্দির মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত গাজা যুদ্ধ বন্ধ হবে না। গাজা উপত্যকা থেকে কেউ যেন আর কোনোদিন ইসরায়েলের জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে না পারে সেটা নিশ্চিত করাকেও গাজা আগ্রাসনের অন্যতম লক্ষ্য বলে উল্লেখ করেন নেতানিয়াহু।
এদিকে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে কমপক্ষে ৮ হাজার শিশু এবং ৬ হাজার ২০০ জন নারী।
সংঘাত শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হচ্ছে। গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আঞ্চলিক পরিচালক রিচার্ড ব্রেনান বলেছেন, তিনি গাজার হতাহতের পরিসংখ্যানকে বিশ্বাসযোগ্য বলেই মনে করেন।
যুদ্ধক্ষেত্রে নিহতদের সঠিক সংখ্যা গণনা করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। গাজার চিকিৎসকরা বলছেন, মৃতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। কারণ ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও অনেকেই চাপা পড়ে থাকতে পারেন বা অনেক মৃতদেহই হাসপাতালে নেওয়া হয়নি বলে ধারণা করা হচ্ছে।