ট্রেন-বাসসহ গণপরিবহনে অগ্নিকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেছেন, একতরফা নির্বাচনের বিরুদ্ধে কেউ যাতে কিছু করতে না পারে, সে জন্য এজেন্টদের দিয়ে সরকারই এসব নাশকতা চালাচ্ছে। আর এসব নাশকতার দায় চাপিয়ে দিচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর।
‘বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলো, একতরফা নির্বাচন ও পরিকল্পিত সহিংসতার প্রতিবাদ’ শীর্ষক সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা সরকারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তোলেন। আজ বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে যাত্রীবাহী ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডে এক মা, তাঁর শিশুসন্তানসহ চারজন নিহত হওয়ার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, সরকার এজেন্টদের দিয়ে নাশকতা করে বিরোধীদের ওপর দায় চাপাচ্ছে। এর প্রধান লক্ষণ হচ্ছে, ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্ত ছাড়াই ঢাকার পুলিশপ্রধান বলেছেন, ‘আন্দোলনকারীরা এ কাজ করেছে।’ আগুন লাগার ঘটনার কোনো তদন্ত না করে এ ধরনের কথা বলা নিশ্চিতভাবেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
সমাবেশে নেতারা বলেন, সিন্ডিকেট আছে, সেটা সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, সিন্ডিকেট ধরা যাবে না, তাহলে জিনিসের দাম আরও বাড়বে। এর অর্থ, এই সিন্ডিকেটই সরকারকে শক্তি জোগায়। ব্যাংকসহ পুরো অর্থনীতি সিন্ডিকেটের কবলে। এই লুটেরা সিন্ডিকেট নিজেদের স্বার্থে সরকারকে টিকিয়ে রাখছে। যুদ্ধের মতো অবস্থা তৈরি করে জনজীবন অনিরাপদ করা হয়েছে। বাসে-ট্রেনে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করে বিরোধী আন্দোলনে কালিমা লিপ্ত করছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের একটি বক্তব্য তুলে ধরে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। তার অর্থ, সরকার ৭০ শতাংশ ভোট দেখাবে। জনগণ এই একতরফা তামাশার নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে বলেই সরকার আগে থেকেই মিথ্যাচার করছে বলে দাবি করেন তাঁরা।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান (মান্না), গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দীন মাহমুদ বক্তব্য দেন।
সভা পরিচালনা করেন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আবু হাসান টিপু। সমাবেশ শেষ হওয়ার পর গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা-কর্মীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন।