ইসমাইল ইমন চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি ।।
দীর্ঘদিন যাবত চট্টগ্রাম নগরীর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম এর একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে ফোনেও হোয়াটসঅ্যাপে জনৈক ব্যাক্তি চাঁদার দাবিতে হুমকি প্রদর্শন করে আসছিলো।
গত ২৬ অক্টোবর ২০২৩ইং তারিখ নাম ও ঠিকানা বিহীন একটি বিদেশী নাম্বার থেকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ভুক্তভোগীর কর্মকর্তার মোবাইলে ভয়েজ ম্যাসেজ দিয়ে ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। উক্ত টাকা না দিলে ভুক্তভোগী’কে পেশাগত জীবনে ক্ষতিসাধনসহ ৪৮ ঘন্টার মধ্যে চাকুরি থেকে অপসারণ করে ক্রসফায়ার দিয়ে হত্যা করে মিডিয়ায় অপপ্রচার করবে বলে হুমকি প্রদার করে। পরবর্তীতে জনৈক ব্যক্তি প্রতিনিয়ত গভীর রাতে ভয়েজ পাঠিয়ে ভুক্তভোগীকে হুমকি দিতে থাকে। উক্ত হুমকির ফলে ভুক্তভোগী ভিকটিম মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম মহানগরীর সদরঘাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করে, যার নং-১৭০১, তারিখ ২৮ অক্টোবর ২০২৩ইং। জনৈক ব্যক্তি কিছুদিন এসএমএস/ভয়েজ পাঠানো বিরতি দিয়ে গত ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩ইং তারিখ ভোর আনুমানিক ০৪:১৪ মিনিটের সময় অজ্ঞাতানামা হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার থেকে পুনরায় ভুক্তভোগী ভিকটিম এর হোয়াটসঅ্যাপে এসএমএস পাঠায়। সেই এসএমএসও আগের মত ভিকটিমকে চাকুরি হতে অপসারণ, নানা রকমের অপবাদ ও পেশাগতভাবে ক্ষতি সাধনসহ তার বিরুদ্ধে মিডিয়ায় অপপ্রচার চালাবে বলে হুমকি দেয়।
ভিকটিমের মোবাইলে ম্যাসেজ করে কোন সারা না পাওয়ায় জনৈক ব্যক্তি ভিকটিমের স্ত্রী’র মোবাইলে এসএমএস প্রেরণ করে এবং বিভিন্ন হুমকি প্রদান করে। উক্ত হুমকির প্রেক্ষিতে ভিকটিম পুনরায় এ সংক্রান্তে চট্টগ্রাম মহানগীর কোতোয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন, যার নং-১৪৫০, তারিখ-১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ইং। সর্বশেষ গত ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ইং তারিখে জনৈক ব্যক্তি ভিকটিমের হোয়াটস এ্যাপে এসএমএস করে ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ইং তারিখ সকালের মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড়তলী থানাধীন অলংকার মোড় সংলগ্ন হোটেল সুইস পার্ক রেসিডেনসিয়াল এর ৫ম তলায় ৩০৭ নং রুমে গিয়ে দাবীকৃত ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দিতে বলে এবং টাকা না দিলে ভিকটিমের বড় ধরনের ক্ষতি করবে বলে হুমকি প্রদান করে।
পরবর্তীতে উক্ত ঘটনায় ভুক্তভোগী ভিকটিম নিরুপায় হয়ে বিষয়টি র্যাব-৭, চট্টগ্রাম’কে অবিহত করে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম ভিকটিমের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ইং মঙ্গলবার ভুক্তভোগী ভিকটিমকে সংগে নিয়ে বর্ণিত হোটেলে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এসময় ভিকটিম উল্লেখিত হোটেলের ৩০৭ নং রুমে গেলে জনৈক ব্যক্তি ভিকটিমের কাছে চাঁদার ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা চাইলে ভিকটিম তাকে চিনেন না বলে জানায় এবং চাঁদা দাবীর কারণ জানতে চাইলে ভিকটিমকে বলে টাকা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলব। এরুপ কথপোকথন হওয়ার মুহুর্তে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল রুমে প্রবেশ করে আসামি খালেদ আহমেদ (৩৫), পিতা-হাজী মোঃ আজিজ মিয়া, স্থায়ী সাং-দত্ত বাকইর, শামরগাও, থানা-জগন্নাথপুর, জেলা-সুনামগঞ্জ, বর্তমানে সাং-বাসা #৩১(৩য় তলা) ব্লক-জে, শাহজালাল উপশহর, সিলেট’কে হাতে নাতে আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে সে উপরোক্ত নাম ঠিকানা প্রকাশ করতঃ দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে কৌশলে চাঁদার টাকার জন্য আটকে রেখে চাঁদা আদায় করে আসছিল বলে নিজ মুখে স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামিকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে নগরীর কোতোয়ালী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।