উজ্জ্বল রায় নড়াইল জেলা প্রতিনিধি ।।
নড়াইল জেলা কালচারাল অফিসার হামিদুর রহমানের অর্থ আত্মসাত ও দুর্নীতি অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এম এম আরাফাত হোসেনকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। উজ্জ্বল রায় নড়াইল জেলা প্রতিনিধি জানান, মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (আরাফাত হোসেন) এ তদন্তের দায়িত্ব দেন।
জেলা কালচারাল অফিসার হামিদুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ এনে গত ১৩ ডিসেম্বর জেলা প্রাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নেতারা। এ সময় হামিদুর রহমানের অপসারণ দাবি করেন তারা। জেলা প্রশাসক তদন্তের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়ার আশ^াস দেন। এছাড়া বিভিন্ন পর্যায়ের শিল্পীসহ অভিভাবকরা জেলা কালচারাল অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।
এ ব্যাপারে তদন্তকারী কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এম এম আরাফাত হোসেন বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়া হবে।
হামিদুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, নড়াইলে অনুষ্ঠিত গণজাগরণের সাংস্কৃতিক উৎসব উপলক্ষে দুই লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। গত ৩ ডিসেম্বর এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তবে এ অনুষ্ঠানে একটিমাত্র সাংস্কৃতিক সংগঠনকে দুই হাজার টাকা দেয়া হয়। বাকি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর আগেও অন্য অনুষ্ঠানগুলোর টাকা আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া শিল্পকলা একাডেমিতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে তিনি অসদাচরণ করেন।
এদিকে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে নড়াইল জেলা কালচারাল অফিসার হামিদুর রহমানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাত ও দুর্নীতি অভিযোগে একাধিক খবর প্রকাশিত হয়। এরপর নিজের সাফাই গেয়ে একটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। সেখানে দাবি করেন, শতভাগ সততা ও বিধি মোতাবেক কাজ করেছেন। তার বিরুদ্ধে একটি কুচক্রীমহল অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিকর সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশ করেছে।
তবে, দেড় বছর আগে ময়মনসিংহ জেলা কালচারাল অফিসার হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় ব্যাপক দুর্নীতির কারণে হামিদুর রহমানকে প্রত্যাহার করে ঢাকায় বদলি করা হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। গত জানুয়ারিতে নড়াইলে যোগদানের পর আবার হামিদুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নড়াইল থেকেও তাকে প্রত্যাহার দাবি করেন সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
এমনকি জেলা শিল্পকলা অডিটোরিয়ামের সাউন্ড, ইলেকট্রিক ও ভবন সংস্কারের কথা বলে সাউন্ড এবং ইলেকট্রিকের কাজ খাতা-কলমে টেন্ডার দেখিয়ে মূলত হামিদুর রহমান নিজেই সেই কাজ করেছেন।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাউন্ড এবং ইলেকট্রনিক্স ও ডেকোরেশন ব্যবসায়ী জানান, তারা অডিটোরিয়ামের কাজ না করলেও তাদের কাছ থেকে জেলা কালচারাল অফিসার ফাঁকা ভাউচার নিয়ে গেছেন।
শিল্পকলা একাডেমির সাবেক অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর শিমুল শেখ বলেন, গত জুলাই মাসে নড়াইলে চাকরিকালীন সময়ে জেলা কালচারাল অফিসার হামিদুর রহমানের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় আমার কাছ থেকে ছয়টি কাগজে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে রাখেন। এরপর আগস্ট মাসে আমাকে পথের কাঁটা ভেবে মেহেরপুরে বদলি করেন।