প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে, সেটা এই মুহূর্তে বলা যাবে না। কিন্তু নির্বাচন কমিশন, প্রার্থী—সবাই মিলে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। তিনি বিশ্বাস করেন, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে। ভোটাররা কেন্দ্রে আসবেন।
আজ বুধবার দুপুরে রাজশাহীতে জেলার ছয়টি আসনের প্রার্থীদের নিয়ে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সিইসি। সভায় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা, নির্বাচন কমিশনের সচিব জাহাংগীর আলম, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আনিসুর রহমান প্রমুখ। সভায় রাজশাহীর ৬টি আসনের ৩৯ প্রার্থীকে চিঠি দেওয়া হলেও সবাই অংশ নেননি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শুরু করেন সকাল ১০টার দিকে। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি বের হয়ে আসেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের এড়িয়ে চলে যেতে থাকেন। পরে সাংবাদিকদের অনুরোধে তিনি এক মিনিটের মতো কথা বলেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, ‘যাঁরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, যাঁরা প্রার্থী, তাঁদের সঙ্গে আমাদের মতবিনিময় হয়েছে। তাঁরাও অত্যন্ত আন্তরিক। তাঁরা কিছু কিছু সমস্যার কথা বলেছেন, কমিশন শুনেছেন, স্থানীয় প্রশাসন শুনেছে। সেই সমস্যাগুলো যদি সত্যিকারের হয়ে থাকে, কীভাবে নিরসন করা যায়, সেই দায়িত্ব আমরা দিয়েছি। ওনারাও (স্থানীয় প্রশাসন) প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে ওনারা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করবেন। যদি কোনো আচরণবিধির ব্যত্যয় ঘটে, সহিংসতার ঘটনা ঘটে থাকে, তাৎক্ষণিকভাবে যেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবস্থা গ্রহণ করে, সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
সিইসি গণমাধ্যমের ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, ‘আপনারাও কিন্তু স্বচ্ছতার ব্যাপারে এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন। সবার প্রয়াসে, আপনাদের চেষ্টায়, আমাদের চেষ্টায়, প্রার্থীদের চেষ্টায় এবং ভোটারদের চেষ্টায় নির্বাচনটা সফল হবে—এ আশাবাদ আমরা ব্যক্ত করি।’
এরপর দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আসন্ন নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগ দেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অভিযোগ
রাজশাহী ছয়টি সংসদীয় আসনের বেশ কয়েকজন প্রার্থী মতবিনিময় সভা শেষে বের হয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের মধ্যে আছেন রাজশাহী-১ আসনের চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি, আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রাব্বানী, রাজশাহী-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ওবায়দুর রহমান, রাজশাহী-৬ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেনুল হক।
রাহেনুল হক বলেন, তাঁর এলাকায় তাঁর সমর্থক এক চেয়ারম্যানকে প্রতিপক্ষ বলেছে, সুস্থ শরীরে ফেরত যেতে দেবে না। তাঁর প্রচারের মাইক ভাঙচুর করা হয়েছে। নির্বাচনী অফিস তালা দিয়ে আবার খুলেছে। ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। ভোটকেন্দ্রে না আসার জন্য হুমকি দেওয়া দেওয়া হচ্ছে। তাঁর বাড়িতে বোমা ফেলা হয়েছে। এভাবে তো নির্বাচনে আনন্দঘন পরিবেশ থাকবে না। এই বিষয়গুলো তিনি নির্বাচন কমিশনকে বলেছেন।
রাহেনুল হক আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে শক্তভাবে নির্দেশ দিয়েছে যে এই বিষয়গুলো দেখতে হবে।
রাজশাহী-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা যুবলীগের সাবেক সহসভাপতি ওবায়দুর রহমান বলেন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। ভোটকেন্দ্রে এলে তাঁদের ভোট দিতে হবে, নইলে আসা যাবে না। গতকাল তাঁর এক কর্মীকে আহত করা হয়েছে। এই বিষয়গুলো তিনি বলেছেন। সর্বোপরি নির্বাচনটা সুষ্ঠু হবে বলে তাঁর বিশ্বাস।
রাজশাহী-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, তিনিও নানা হুমকি পাচ্ছেন। তিনি এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।