মো: রাশেদুজ্জামান রাশেদ পঞ্চগড় প্রতিনিধি ।।
হাড়কাপা কনকনে শীত সকালে সূর্যের দেখা মিললেও বারোটা বাজাচ্ছে পৌষ। গত তিনদিন ধরে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় বইছে হিমশীতল মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি।
সোমবার সকাল ৯টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে পঞ্চগড় তেঁতুলিয়া উপজেলায়। ভোর ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী গত তিনদিন ধরেই এ অঞ্চলে বইছে মৃদু শৈত্য প্রবাহ চলছে।
সকালে প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ তিনি জানান, গত রবিবারের চেয়ে তাপমাত্রা আরও নিম্ন মুখি । ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা রেকর্ড হওয়ায় এ অঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে এতে করে শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পাবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, গত কয়েকদিন ধরেই ভোরে আলোর কিরণ ছড়িয়ে দেখা মেলে সূর্যের। কিন্তু রোদ উঠলেও রাত থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত অনুভূত হচ্ছে বরফঝরা শীত। গ্রামীণ জনপদে নিম্ন আয়ের মানুষরা শীত নিবারণ করছে খড়কুটো জ্বালিয়ে। জীবিকার তাগিদে শীত উপেক্ষা করেই সকাল সকাল কাজে যেতে দেখা যায় এ অঞ্চলে পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিক, দিনমজুর থেকে নিম্ন আয়ের বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষদের।
গ্রামের গৃহিনীরা জানান, কুয়াশা না থাকলেও খুব ঠান্ডা। রাতে বৃষ্টির ফোটার মতো শিশির ঝরা শব্দ শোনা যায়। ঘরের মেঝে থেকে শুরু করে আসবাপত্র ও বিছানা পর্যন্ত বরফ হয়ে উঠে। সকালে গৃহস্থালী করতে গিয়ে কনকনে ঠান্ডায় হাত-পা অবশ হয়ে আসে।
চা শ্রমিক ও পাথর শ্রমিকরা জানান, কুয়াশা নেই। তবে কনকনে শীত। ভোরে প্রচন্ড হিমশীতের মধ্যেই তারা চা বাগানে পাতা তুলতে এসে হাত-পা অবশ হয়ে আসছে। কিন্তু কী করবো, জীবিকার তাগিদে কাজ করতে হচ্ছে। একই কথা বলেন নদীতে পাথর তুলতে যাওয়া শ্রমিকরা।
এদিকে হাড়কাপানো শীতের কারণে বিভিন্ন শীতজনিত রোগ ব্যাধি জ্বর, সর্দি, কাশ, নিমোনিয়া, ইত্যাদি রোগে বেশি ভাগে আক্রান্ত হচ্ছে স্থানীয় অনেক শিশু। জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোতে আউটডোরে ঠান্ডাজনিত রোগী বাড়তে শুরু করেছে রোগীর সংক্ষ্যা। চিকিৎকরা পাশাপাশি শীতজনিত রোগ থেকে নিরাময় থাকতে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন।
জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ‘প্রতি বছর এ জেলায় শীত বেশি থাকে। এবারও শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করেছি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে শীতবস্ত্র চেয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। প্রকৃত গরিব, অসহায় ও শীতার্তদের মধ্যে এসব শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে।