ডিফেন্ডার হিসেবে সার্জিও রামোসের নাম সর্বকালের সেরাদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় নিশ্চিতভাবেই থাকবে। স্পেন জাতীয় দল, রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতেই আন্তর্জাতিক ও ক্লাব ফুটবলে সম্ভাব্য সব শিরোপাই জিতেছেন তিনি। ডিফেন্ডার হলেও গোল করায় ভীষণ পটু এই ৩৭ বছর বয়সীর নামের পাশে আছে একশর বেশি গোল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এবার গোলের রেকর্ড গড়েছেন রামোস।
গত মৌসুমে ইউরোপা লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে চ্যম্পিয়ন্স লিগে জায়গা করে নিয়েছিল সেভিয়া। তবে এবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হচ্ছে তাদের। গ্রুপ বি’তে কোনো ম্যাচ না জিতেই একদম তলানিতে থেকে বিদায় নিয়েছে সেভিয়া। গতকাল মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) লেন্সের মাঠে ২-১ গোলে হেরে গেছে সেভিয়া। দলের হারের দিনে পেনাল্টি থেকে একটি গোল করেন সার্জিও রামোস।
চলতি মৌসুমে পিএসজি থেকে সেভিয়ায় যোগ দিয়ে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ছয় ম্যাচে ২ গোল করলেন রামোস। গতকাল লেন্সের বিপক্ষে গোলটি করে রেকর্ড বুকে জায়গা করে নিয়েছেন এক সময় রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলা এই ডিফেন্ডার। ১৭ গোল নিয়ে তিনিই এখন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোল করা ডিফেন্ডার। পেছনে ফেলেছেন জেরার্ড পিকে ও রবার্তো কার্লোসকে।
রামোস চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তার করা ১৭ গোলের মধ্যে ১৫ গোলই করেছেন রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলার সময়। মাদ্রিদের ক্লাবটির হয়ে ১২৯ ম্যাচে ১৫ গোল করার পাশাপাশি ৯টি অ্যাসিস্টও করেছেন তিনি। এ সময়ে চারবার জিতেছেন প্রতিযোগিতাটির শিরোপাও।
সেভিয়ার হয়ে দুই দফায় ৬১ ম্যাচে ২ গোল ও ১ অ্যাসিস্ট করেছেন রামোস। তবে পিএসজির জার্সিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৮ ম্যাচ খেললেও কোনো গোল-অ্যাসিস্ট করতে পারেননি তিনি।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সর্বোচ্চ গোল করা ডিফেন্ডারদের তালিকার সেরা পাঁচে রামোস ছাড়াও আছেন রিয়াল মাদ্রিদের আরও দুই কিংবদন্তি ডিফেন্ডার -রবার্তো কার্লোস ও ইভান হেলেগুয়েরা। বার্সেলোনার দুই কিংবদন্তি জেরার্ড পিকে ও রোনাল্ড কোম্যানও আছেন তালিকায়।
জেরার্ড পিকে (বার্সেলোনা): চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১২৮ ম্যাচ খেলে ১৬ গোল করেছেন স্পেনের এই কিংবদন্তি। পিকে এই ১৬ গোল করেছেন রামোসের মতোই ভিন্ন দুটি ক্লাবের হয়ে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে ২০০৪-০৮ পর্যন্ত ৪ ম্যাচ খেলে ২ গোল করেছেন পিকে। এরপর বার্সেলোনায় যোগ দিয়ে ১২৪ ম্যাচে করেছেন ১৪ গোল। এর পাশাপাশি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তার নামের পাশে ২টি অ্যাসিস্টও আছে।
রবার্তো কার্লোস (রিয়াল মাদ্রিদ): রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রবার্তো কার্লোসও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১৬ গোল করেছেন। মোট দুটি ক্লাবের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেললেও কার্লোসের সবগুলো গোল এসেছে রিয়ালের জার্সিতেই। মোট ১২০ ম্যাচে ১৬ গোল করেছেন তিনি। এর মধ্যে রিয়ালের জার্সিতেই ১০৭ ম্যাচে করেছেন এই ১৬ গোল। এর পাশাপাশি নামের পাশে আছে ২৭টি অ্যাসিস্টও।
ইভান হেলেগুয়েরা (রিয়াল মাদ্রিদ): স্পেনের সাবেক এই খেলোয়াড় গোটা ক্যারিয়ারেই খেলেছেন হয় সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার নতুন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে মোট ৮৭ ম্যাচ খেলে এই ১৫ গোল করেছেন হেলেগুয়েরা। যার মধ্যে রিয়ালের জার্সিতেই ৮১ ম্যাচে এই গোলগুলো করেছেন তিনি। আসিস্টও করেছেন ৫টি।
হেলেগুয়েরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সেরা মৌসুম কাটান ২০০০-০১ সালে। সেবার ১৪ ম্যাচে ৬ গোল ও ২ অ্যাসিস্ট করেন তিনি।
রোনাল্ড কোম্যান: সর্বকালের অন্যতম আক্রমণাত্মক ডিফেন্ডার হিসেবে খ্যাত এই ডাচ ডিফেন্ডার তিনটি ক্লাবের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে মোট ১৩ গোল করেছেন। এর মধ্যে ৪টি গোল করেন ইউরোপিয়ান কাপে, যা ছিল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের পুরনো সংস্করণ।
ইউরোপিয়ান কাপের ৪ গোলের মধ্যে ৩টি করেন পিএসভি আইন্দহোভেনের হয়ে। বাকি গোলটি করেন বার্সেলোনার জার্সিতে। এরপর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ নামকরণের পর বার্সেলোনার জার্সিতে ওয়ে বাকি গোলগুলো করেন।