আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আচরণবিধি ভঙ্গ করায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমুকে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) তলব করা হয়েছে।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে তাকে আগামী ১৫ ডিসেম্বর কমিশনে হাজির হতে বলা হয়েছে।
এর আগ গত ৩০ নভেম্বর সহস্রাধিক নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ঝালকাঠি-২ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেন আমু। ওইদিন বেলা ১১টার দিকে নেতাকর্মীদের নিয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি। জেলা প্রশাসক রিটার্নিং কর্মকর্তা ফারহা গুল নিঝুম ওই মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেন। মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে নৌকার মনোনীত আওয়ামী লীগের এ প্রবীণ নেতা আমির হোসেন আমু দেশবাসী ও প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিকূল অবস্থার মধ্যদিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। আমারা চাই, জনগণ স্বতঃস্ফূর্ততার সঙ্গে যাকে খুশি তাকে ভোট দিক। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় সঙ্গে আসা হাজারো নেতৃবৃন্দ ও কর্মী সমর্থকদের ধন্যবাদ জানান আমির হোসেন আমু।
এদিকে আজই নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমকে শোকজ করেছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি।
নির্বাচনী অনুসন্ধান কর্মকর্তা মোছাম্মৎ ইছরাত জাহান নাসরিন এ নোটিশ দেন। সেইসঙ্গে প্রচারিত সংবাদের লিংক সংযুক্ত করে দেয়া হয়।
আচরণ বিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে রোববারের (১০ ডিসেম্বর) মধ্যে বাহাউদ্দীন নাছিমকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। ফাইল ছবি
বাহাউদ্দিন নাছিমকে পাঠানো ওই নোটিশে বলা হয়,
গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর শান্তিনগর, শাহজাহানপুর ও আরামবাগের স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। এ সময় আপনি দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এসব এলাকায় যান এবং স্থানীয় নির্বাচনি কার্যালয় পরিদর্শন করেন। তখন বিপুল জনসমাগম ঘটে এবং আপনি নৌকার পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণা চালান, যা নির্বাচন পূর্ব অনিয়ম হিসেবে গণ্য হয়। বিষয়টি কমিটির নজরে এসেছে এবং সংবাদের তথ্য বিশ্লেষণ করে অনুসন্ধান কমিটি নির্বাচন পূর্ব অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, মতবিনিময় সভাকে কেন্দ্র করে নির্বাচনী এলাকা-১৮১ এর বিভিন্ন স্থানে নৌকা প্রতীকের অসংখ্যা পোস্টার ও ব্যানার লাগানো হয়েছে। তাছাড়াও অনুসন্ধানকালে আরও দেখা যায়, নির্বাচনী এলাকা-১৮১ এর শাহবাগ মোড় জাদুঘরের সামনে, নয়াপল্টন কালভার্ট রোড রূপায়ণ টাওয়ারের সামনে, মৌচাক মোড় ফ্লাইওভারের নিচে, মালিবাগ মোড়, শান্তিনগর মোড়, দৈনিক বাংলার মোড়, আমতলা মোড়, শাহজাহানপুর চৌরাস্তায় আপনার নাম, ছবি এবং নৌকা প্রতীক ব্যবহার করে বড় রঙিন ব্যানার, বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে, যা বৈদ্যুতিক খুঁটি, পিলার, ফুটওভার ব্রিজ ও মেট্রো রেলের পিলারের সঙ্গে লাগানো আছে। এসব কার্যক্রম নির্বাচন পূর্ব অনিয়ম হিসেবে গণ্য হয়েছে।
নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, আপনার এই কার্যক্রমের মাধ্যমে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আচরণ বিধিমালা-২০০৮ এর বিধি ১২ এবং ৭(১) এর (ক), (খ) লঙ্ঘন হয়েছে। বিধি অনুযায়ী ভোট গ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনের তিন সপ্তাহ সময়ের পূর্বে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচার শুরু করতে পারবেন না। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কেন বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের নিকট প্রেরণ করা হবে না মর্মে আগামী রোববার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর ৩টার মধ্যে কমিটির কার্যালয়ে জজ (যুগ্ম জেলা জজ) অর্থঋণ আদালত নং-৪, ঢাকায় ব্যক্তিগতভাবে অথবা আপনার মনোনীত একজন প্রতিনিধির মাধ্যমে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হলো।