মো: রবিউল ইসলাম খান, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি।।
‘সংখ্যালঘু পরিবারের জমি ফিরিয়ে দাও, না হয় বিষ দাও’ এমন স্লোগান সামনে রেখে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। ০৭ জানুয়ারী (বৃহস্পতিবার) সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে ঘন্টাব্যাপী এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। পরে একই দাবিতে দুপুরে শহরের একটি চাইনিজ রেষ্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবারটি।
এতে উপস্থিত ছিলেন জমির মালিক ননি গোপাল সূত্রধর, তার ছেলে স্বপন সূত্রধর, তপন সূত্রধর, নাতি রজনজিত সূত্রধর, আত্মীয় উত্তম সূত্রধর, পরিমল মজুমদার ও দোকানের কর্মচারী কামাল হোসেন।
এসময় লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের চরমটুয়া আল আরাবিয়া দারুল উলুম মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবু তাহের, স্থানীয় ফয়েজ গং এর বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ আনে ভূক্তভোগী পরিবারটি।
ননী গোপাল সূত্রধর লিখিত বক্তব্যে জানান, ১৯৭৪ সালে ১৩ জুলাই ১০৫৯৫নং দলিলে সরকার থেকে ননী গোপালকে ১ একর ৫০ শতাংশ নাল জমি বন্দোবস্ত দেয়। তখন তাকে দখলও বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এরমধ্যে ২০৮নং শহর কসবা মৌজার ৬২২ নং খতিয়ানভূক্ত ২৭৬৪ দাগে ৬৯ শতক ও ২৩৩৩ দাগে ৮১ শতক জমি। অভাব অনটনের কারণে পরে তিনি বিদেশ পাড়ি দেন। সেই সুযোগে স্থানীয় বাসিন্দা ফয়েজ আহাম্মদরা তার ছেলেদের ওই জমি থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয়।
২০০৩ সালে দেশে ফেরার পর ননী গোপাল জমি নিয়ে সমস্যা সমাধানে চেষ্টা চালিয়েও কোন সুরাহা হয়নি। এরমধ্যে মাওলানা আবু তাহের তার ছেলেদেরকে ৮১ শতক জমি মাদ্রাসার নামে রেজিষ্ট্রি করে দিতে বলে। এতে অস্বীকৃতি জানালে ধর্মীয় অনুভূতি সামনে এনে ননী গোপাল পরিবারকে ভয়ভীতি দেখানো হয়। এ ঘটনায় তিনি মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানায় অভিযোগ দেয়।
তখন জমিটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের দখলে আছে বলে ননী গোপালকে তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক ইবনে হুছাইন ভুলু জমির মালিকানা দাবি না করার জন্য পরামর্শ দেয়। এছাড়া জমিটি অসুদুপায়ে নিজেদের মাদ্রাসার নামে করে নিতে দুটি জাল দলিল (১৩৬৫৪ ও ৭৫৪১) তৈরি করে। দলিল তৈরির সময় ও তারিখে ননী গোপাল প্রবাসে ছিলেন। তার স্বাক্ষর ও টিপসইও জাল করা হয়েছে বলে দাবি ভুক্তভোগী ননী গোপালের।
ননী গোপালের ছেলে তপন সূত্রধর বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান ভুলুর সহযোগীতায় মাওলানা তাহের তাদের জমিটি জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে। তারা জমি ফেরত পেতে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগীতা চান।
অভিযোগের বিষয়ে চরমটুয়া আল আরাবিয়া দারুল উলুম মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবু তাহের বলেন, আবদুল মতিন নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে মাদ্রাসা জমি কিনেছে। ননী গোপালদের কোন অভিযোগ থাকলে মতিনের বিরুদ্ধে থাকবে। আমি তাদের কোন জমি দখল করিনি। আমি কাউকে জমি রেজিষ্ট্রি করে দিতেও বলিনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তোলা হয়েছে।
তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক ইবনে হুছাইন ভুলু বলেন, জমি বিষয়ে আমার কোন কিছু জানা নেই। তাদের অভিযোগ নিয়ে সদর থানায় বৈঠক ছিল। ওইদিন লক্ষ্মীপুরে আবু তাহেরের সঙ্গে আমার দেখা হয়। তখন তিনি আমাকে অনুরোধ করলে আমি বৈঠকে যাই। এর বেশি কিছু আমার জানা নেই। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে।