ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করে মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউর লোভে এবার জেল হলো আমেরিকার ইউটিউবার ট্রেভর জ্যাকবের।
৩০ বছর বয়সি জ্যাকব ২০২১ সালের ডিসেম্বরে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার একটি ভিডিও নিজের ইউটিউব চ্যানেলে পোস্ট করেন। এই ভিডিওর শিরোনাম ছিল: ‘আই ক্র্যাশড মাই এয়ারোপ্লেন’।
দুই বছর আগের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, হঠাৎই আকাশে উড়ন্ত অবস্থায় জ্যাকবের উড়োজাহাজটি দুর্ঘটনার শিকার হয়। দুর্ঘটনায় উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হলেও কোনোমতে হাতে সেলফি স্টিক আর গায়ে প্যারাসুট নিয়ে সেই দুর্ঘটনাকবলিত বিধ্বস্ত উড়োজাহাজ থেকে বেরিয়ে এসে প্রাণে বেঁচে যান তিনি।
ইউটিউবে এমন লোমহর্ষক দৃশ্য দেখে অবাক হন নেটিজেনরা। রাতারাতিই জ্যাকবের এ ভিডিওর মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউ ছাড়িয়ে যায়। তবে এমন দুর্ঘটনা মেনে নিতে পারেনি ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড এবং ফেডারেল এভিয়েশন এডমিনিস্ট্রেশন। তারা এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেন।
ঘটনার তদন্তে বেরিয়ে আসে, দুর্ঘটনাকবলিত ওই উড়োজাহাজটি প্রায় জ্বালানিহীন হয়ে পড়েছিল। এ সময় ইঞ্জিনেও সমস্যা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু জ্যাকব চাইলেই আশপাশের কোনো নিরাপদ স্থানে ল্যান্ডিং করাতে পারতেন উড়োজাহাজটিকে। কিন্তু তা না করে জ্যাকব উড়োজাহাজটিকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যান।
‘বিমানটি ইচ্ছাকৃতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে’- এ খবর যেন কখনই প্রকাশ্যে না আসে সেজন্য জ্যাকব উড়োজাহাজটির বিভিন্ন অংশ সরিয়ে ফেলেন। কিন্তু তদন্তে ঠিকই বেরিয়ে আসে সেসব তথ্য। তাই জ্যাকবের পাইলট লাইসেন্স বাতিল করা হয়। এ অপরাধে জ্যাকবকে আটক করা হলে তিনি বিমান ধ্বংস করে দেয়ার অভিযোগ স্বীকার করেন।
নিজের বিমান কেন এভাবে ধ্বংস করলেন জ্যাকব? এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়ার ফেডারেল প্রসিকিউটররা।
সোমবার ( ৪ ডিসেম্বর) সংবাদমাধ্যমকে তারা জানান, জ্যাকব সম্ভবত নিজের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় নজর কাড়তে, নিউজ কভারেজ পেতে এবং আর্থিক লাভের জন্য অপরাধটি করেছিলেন। যা মেনে নেয়া যায় না। তাই ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে জ্যাকবকে। এদিকে মার্কিন ওই ইউটিউবারও এ রায়কে সঠিক বলে মেনেও নিয়েছেন।