আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুসারে দেশের বেশির ভাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বদলি করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে বড়দিন ও থার্টি-ফার্স্ট নাইট উদ্যাপন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন সুনির্দিষ্টভাবে বলে দিয়েছে যারা ছয় মাসের বেশি সময় এক জায়গায় রয়েছেন সেসব ওসিকে বদলি করতে বলেছেন। তারা সময় বেঁধে দিয়েছেন, সেই সময় অনুযায়ী জননিরাপত্তা সচিব এবং আইজিপি বসে পাঠিয়ে দেবেন, দু’একদিনের মধ্যে প্রস্তাব চলে যাবে। এখন যা কিছু হয় নির্বাচন কমিশন সব নিয়ন্ত্রণ করে। তারা যে ধরনের নির্দেশনা দিচ্ছেন সে অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। প্রায় ওসিকে বদলি করতে হবে।
রাজনৈতিক সহিংসতা কিংবা নাশকতার কারণে নির্বাচন বন্ধ থাকবে না বলেও জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, নির্বাচন সঠিক সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের আমেজ ও উৎসব শুরু হয়ে গেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন যথাসময়ে হবে। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন ঘোষণা করেছেন। ইতোমধ্যে নিবন্ধিত ২৯টি দল, বেশিরভাগ দলগুলো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। নির্বাচনের আমেজ, একটা উৎসব শুরু হয়ে গেছে। কাজেই এখানে কেউ নাশকতা করবে, এটা কেউ চাই না।
বিএনপির সমালোচনা করে আসাদুজ্জামান খান বলেন, যে দলটি নাশকতার বলছেন, এটা তাদের প্র্যাকটিস, তারা সুনিশ্চিত নির্বাচনে পরাজয় জেনেই ভিন্ন পন্থায় নির্বাচনকে প্রতিহত করার জন্য একটা অগণতান্ত্রিক উপায় শুরু করেছে।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি,
আমাদের নির্বাচনের বাহিরে আর কোনো কিছু নেই। যার মাধ্যমে তারা (বিএনপি) ক্ষমতা বদলাতে পারে। ক্ষমতায় আসতে হলে তাদের নির্বাচনে আসবে হবে। এটাই হলো সহজ পন্থা।
২০১৮ সালের অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে বর্তমান রাজনৈতিক চলমান অবরোধ প্রসঙ্গ টানেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) ২০১৪-তে সেই নাশকতা, অগ্নিসংন্ত্রাস কনটিনিউয়াসলি ৯০ দিন করেছে। আগুনে পুড়িয়ে মানুষ মেরেছে। এবারও তারা সেটাই শুরু করেছে।
২৮ অক্টোবর তাদের নিষ্ঠুরতা বর্বরতা আপনারা দেখেছেন, পুলিশকে হত্যা করেছে, আনসারকে হত্যা করেছে, প্রধান বিচারপতির বাসায় গিয়ে হামলা করেছে, জাস্টিজ কমপ্লেক্সে ডুকে গিয়েছে, হাসপাতালে হামলা করেছে, সেবিকাদের মেরেছে, অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়েছে। আমরা রাজনীতিবিদরা মনে করেছিলাম, তারা দুঃখ প্রকাশ করবেন। তা না করে তারা (বিএনপি) পরদিন আবার হরতাল ডাকলেন।
তিনি বলেন, চলমান রাজনৈতিক সহিংসতার সঙ্গে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা নেই। বর্বরতা নিষ্ঠুরতা থেকে সাধারণ মানুষ মুক্তি চায়। সেজন্য নিরাপত্তা বাহিনী যথাযথ কাজটি করছে। এই নাশকতার কারণে বা সন্ত্রাসের কারণে নির্বাচন বন্ধ থাকবে না। নির্বাচন সঠিক সময়ে অনুষ্ঠিত হবে।
আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী অত্যন্ত চৌকস এবং তারা অত্যন্ত প্রফেশনাল এবং অত্যন্ত দক্ষ। তারা দেশকে ভালোবাসে, তারা তাদের অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে এবং এদেশের নাগরিকরাও তাদের সহযোগিতা করবে।
চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা কেন বন্ধ করা যাচ্ছে না-প্রশ্ন রাখা হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে। জবাবে মন্ত্রী বলেন, পুরোপুরি অবশ্যই বন্ধ হবে। এর আগে ৯০ দিন করে বন্ধ করেছে। এবারও তাদের নেতৃবৃন্ধের বোধদয় হবে এবং তারা বন্ধ করে দেবে।