দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতি নমনীয়তা আওয়ামী লীগের কৌশল হলেও ঢালাওভাবে তার প্রয়োগ হবে কি-না সেই সিদ্ধান্ত আসবে কিছুদিন পর। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, কমিশনের জন্য এমন অবস্থা চ্যালেঞ্জ হলেও প্রার্থীর সংখ্যা বাড়লে ভোটে যেমন প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ে, তেমনি তা সুষ্ঠু নির্বাচনের নিয়ামক হিসেবেও কাজ করে।
আওয়ামী লীগ নিজেই যেন দলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। ৩০০ আসনের বিপরীতে ২৯৮টি আসনে নৌকার প্রার্থী দিলেও ইসিতে নৌকার প্রার্থী হিসেবে জমা পড়েছে ৩০৫টি মনোনয়নপত্র। সেখানে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন প্রায় ৪৪০ জন।
বিষয়টি যেকোনো নির্বাচনে কঠোরভাবে দেখা হলেও এবারের বাস্তবতা ভিন্ন। দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণার আগেই এ বিষয়ে দলীয় প্রধানের কিছুটা নমনীয়তার ইঙ্গিত ছিল। ফলে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীর চেয়ে প্রায় ১৩৫ প্রার্থী বেশি রয়েছেন স্বতন্ত্র হিসেবে। এমন বাস্তবতায় মাঠ পর্যায়ে নৌকার টিকিট পাওয়া অধিকাংশই আছেন অস্বস্তিতে।
তবে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে কেন্দ্র এখন পর্যন্ত বিষয়টি কৌশল হিসেবেই ধরে নিয়েছে। তবে সার্বিক দিক বিবেচনা করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময়ে এসে নেয়া হবে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন,
একেক জায়গায় একেক ধরনের মানসিকতা আছে। সেই মানসিকতা থেকে শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়ায়, সেটা আমরা দেখতে চাই। আমাদের নেত্রী সেটা লক্ষ করছেন। আমরাও দৃষ্টি রাখছি। তিনি যেভাবে সিদ্ধান্ত দেবেন, সেভাবেই হবে।
স্থানীয়ভাবে একাধিক প্রভাবশালীর লড়াই ভোটের কাজটা চ্যালেঞ্জ হবে কি-না – এমন প্রশ্নে সাবেক নির্বাচন কমিশনাররা বলছেন, ইসির জন্য কিছুটা কঠিন হলেও তা সুষ্ঠু নির্বাচনের সহায়ক।
এ বিষয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন,
এখানে দেখা যাচ্ছে কেউ হয়ত নৌকার প্রার্থী হতে পারেনি বিধায় স্বতন্ত্র হয়ে এসেছেন। এখানে কিন্তু দুজনেরই প্রভাব থাকবে। সুষ্ঠু ভোটের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে সব সময়ই একটা চ্যালেঞ্জ থাকে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়। কারণ তারাই তখন দায়িত্বটা নেন।
সেক্ষেত্রে অবশ্য আইন শৃঙ্খলারক্ষা বাহিনী ও প্রশাসনের ওপর কমিশনের নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে বলেও মনে করেন এ সাবেক নির্বাচন কমিশনার।