পাবনার ঈশ্বরদী থেকে ঢালারচর পর্যন্ত ৭৯ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ব্যয় হয়েছে পৌনে দুই হাজার কোটি টাকা। তবে এই পথে ট্রেন চলে মাত্র একটি; নাম ‘ঢালারচর এক্সপ্রেস’। বিপুল বিনিয়োগে গড়ে তোলা এ রেলপথে একটি মাত্র ট্রেন চলাচলে রাষ্ট্রের অর্থের অপচয় হচ্ছে। রেলপথটিতে ট্রেন চলাচল বাড়ানোর পাশাপাশি ঢাকার সঙ্গে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা সংযুক্ত করার দাবি স্থানীয়দের।
তবে আগামী ডিসেম্বর থেকে ‘ঢালারচর এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পর্যন্ত চলার আশ্বাস দিয়েছে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বিপুল অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে গড়ে তোলা এ রেলপথে বর্তমানে চলাচল করছে একটি মাত্র ট্রেন ‘ঢালারচর এক্সপ্রেস’ । যা পাবনার ঢালারচর থেকে রাজশাহী পর্যন্ত চলাচল করে। সপ্তাহে ছয় দিন চলা এই ট্রেনটি সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে ঢালারচর থেকে ছেড়ে বেলা ১১টায় রাজশাহী পৌঁছায়। আবার বিকেল সাড়ে ৪টায় রাজশাহী থেকে ছেড়ে ঢালারচর পৌঁছায় রাত ৮টা ১৫ মিনিটে।
আবির, করিম, জুয়েল ও সবুজসহ স্থানীয়রা বলেন, যাত্রীদের অনেক চাপ থাকে। একটি ট্রেনে এই চাপ সামাল দেয়া সম্ভব না। পাবনা থেকে ঢাকার পথে আমাদের আরেকটি ট্রেন দেয়া হোক। এখান থেকে দুটি ট্রেন দিয়ে যাতায়াত আরও সহজ হবে।
স্থানীয়দের দাবি, বিপুল বিনিয়োগে গড়ে তোলা এ রেলপথে একটি মাত্র ট্রেন চলাচলে রাষ্ট্রের অর্থের অপচয় হচ্ছে৷ সরকারের রাজস্ব আয় বাড়াতে এই রেলপথে ট্রেন বাড়ানোর পাশাপাশি ঢাকা পর্যন্ত রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা করার দাবি তাদের।
এই রেলপথ নিয়ে নতুন কোনো পরিকল্পনা না থাকলেও ‘ঢালারচর এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পর্যন্ত রুট বাড়ানো হয়েছে। আগামী পহেলা ডিসেম্বর থেকে ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পর্যন্ত চলবে বলেও জানান বাংলাদেশ রেলওয়ের (পাকশী) বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক শাহ সুফী নুর মোহাম্মদ।
তিনি জানান, চাহিদা থাকলেও আমাদের রেলকোচের স্বল্পতা আছে। কোচের প্রাপ্তি সাপেক্ষে ভবিষ্যতে ট্রেন বাড়ানো উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে।
‘ঢালারচর এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি প্রতি সাপ্তাহে সোমবার চলাচল বন্ধ থাকে। তবে, ডিসেম্বর মাস থেকে সোমবারে ট্রেন চললেও মঙ্গলবারে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১০ সালের ৫ অক্টোবর একনেক সভায় অনুমোদিত হয় ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে বেড়া উপজেলার ঢালারচর পর্যন্ত ৭৯ কিলোমিটার নতুন লাইন নির্মাণ প্রকল্প। ২০১০ সালের জুন থেকে ২০১৫ সালের জুন মেয়াদে রেলপথটি নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৯৮৩ কোটি টাকা। তবে নির্মাণকাজের দীর্ঘসূত্রিতার কারণে একাধিকবার মেয়াদ ও ব্যয় সংশোধন করা হয়। পরে প্রকল্পটি শেষ করতে রেলওয়ে সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে এক হাজার ৭১৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা; যার কাজ শেষ হয় ২০১৯ সালের জুনে।